গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব হিসেবে নোবেলজয়ী নারী অধিকারকর্মী মালালা ইউসুফজাইয়ের ছবি ছাপানোয় পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের শিক্ষাবোর্ড ওই পাঠ্যবই জব্দ করার পর তা বাজেয়াপ্ত করেছে। বইটি ছাপিয়েছিল অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস (ওইউপি)।

সোমবার পাকিস্তানের পাঞ্জাব কারিকুলাম অ্যান্ড টেক্সট বুক বোর্ড (পিসিটিবি) বইটি জব্দ করে তা বাজেয়াপ্ত করেছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যে বসবাসরত মালালার ইসলাম নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গির কারণে ওই পাঠ্যবই বাজেয়াপ্ত করা হলো।

সপ্তম শ্রেণির জন্য ‌সামাজিক শিক্ষা বিষয়ের ওই বইয়ে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, কবি ইকবাল, শিক্ষাবিদ স্যার সৈয়দ আহসান, প্রথম প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান ও প্রখ্যাত দানবীর আব্দুল সাত্তার ইধিসহ অন্যান্যদের পাশে মালালার ছবিও ছাপা হয়েছিল।

বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর শুরু হয় সমালোচনা। পরে বোর্ড বইটি বাজেয়াপ্ত করে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন দোকান থেকে বইটি জব্দ করে। বোর্ড বলছে, বইটি ছাপানোর আগে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস (ওইউপি) তাদের অনাপত্তিপত্র নেয়নি। 

বইটি ইতোমধ্যে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিলি করা হয়েছে। এখন পাঞ্জাব কারিকুলাম অ্যান্ড টেক্সট বুক বোর্ড পুলিশ ও অন্য সংস্থাগুলোকে নিয়ে পাঞ্জাব শহরের বিভিন্ন দোকানে অভিযান চালাচ্ছে। যেখানেই বইটি পাওয়া যাচ্ছে তখনই জব্দ করা হচ্ছে।

গতকাল সোমবার পিসিটিবির একদল কর্মকর্তা গুলবার্গের মিনি মার্কেটে ওইউপির অফিসে অভিযান চালান এবং সেখানে থাকা সব কপি বাজেয়াপ্ত করেন। ওই প্রতিনিধিদল গণমাধ্যমে চিঠি দিয়ে বলেছে, ওই বই প্রকাশের অনুমতি দেওয়া হয়নি।

পাকিস্তানের বেসরকারি বিদ্যালয় সমিতি মালালাকে নিয়ে নতুন একটি তথ্যচিত্রের প্রচার শুরু করেছে। ওই তথ্যচিত্রে মালালার ইসলাম, বিবাহ এবং পাশ্চাত্য এজেন্ডা নিয়ে বিতর্কিত মতামত ও মন্তব্য নিয়ে নানান বক্তব্য তুলে তার প্রচার চালানো হচ্ছে।

সোমবার ২৪ বছরে পা দেওয়া সর্বকনিষ্ঠ নোবেলজয়ী মালালা মানবাধিকার, বিশেষ করে নারী ও শিশুশিক্ষা নিয়ে সোচ্চার। জন্মস্থান খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে মেয়েদের স্কুলে যাওয়া নিষিদ্ধ করেছিল তেহরিক-ই-তালেবান। 

প্রত্যন্ত সোয়াত উপত্যকায় জন্ম নেওয়া মালালা তালেবানের বাধার পরও নারী শিক্ষা বিস্তারে কাজ করে যাওয়ায় ২০১২ সালে জঙ্গিরা তাকে গুলি করে। এ সময় চিকিৎসার জন্য তাকে যুক্তরাজ্যে নেওয়া হয়। এরপর থেকে তিনি পরিবারসহ যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন।

এএস