অপ্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের করোনার টিকা দেওয়া শুরু করতে যাচ্ছে চীন। দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে করা এক প্রতিবেদনে চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থা সিনহুয়া নিউজ জানিয়েছে, চলতি মাস থেকেই এই কার্যক্রম শুরু হচ্ছে।

মঙ্গলবার সিনহুয়া নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের হুবেই প্রদেশের দক্ষিণ পশ্চিাঞ্চলীয় বিভাগ গুয়াংজি ও জিংমেন শহরে চলতি মাস থেকেই ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের করোনা টিকা দেওয়া শুরু হবে।

আগামী অক্টোবরের মধ্যে চীনের ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী সবাইকে টিকার আওতায় আনার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে বলেও সিনহুয়া নিউজকে জানিয়েছেন দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য দেশের অভ্যন্তরে উৎপাদিত দু’টি করোনা টিকার অনুমোদন দিয়েছে চীনের সরকার। তার একটি উৎপাদন করেছে চীনের ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানি সিনোভ্যাক বায়োটেক এবং অপরটির উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানি সিনোফার্ম।

চীনের সিনোভ্যাক বায়োটেকের করোনা টিকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পেয়েছে। তবে অপ্রাপ্তবয়স্কদের টিকাদান কর্মসূচীতে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান সিনোফার্মের করোনা টিকা ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।   

গত দেড় বছর ধরে যে করোনা মহামারিতে বিশ্ব কাঁপছে, সেই রোগ প্রথম দেখা গিয়েছিল চীনে। দেশটির সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম দেখা মিলেছিল করোনায় আক্রান্ত রোগীর। বিশ্বে প্রথম করোনায় মৃত্যুও হয়েছিল চীনে।

অবশ্য সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, এ তথ্য সঠিক নয়। ২০১৯ এর ডিসেম্বরের আগেই চীনে বিক্ষিপ্তভাবে করোনায় আক্রান্ত রোগী ছিলেন।

তবে করোনার উৎপত্তিস্থল হলেও দেশের অভ্যন্তরে মাহামারিকে বেশ ভালোভাবেই মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছে চীনের কেন্দ্রীয় সরকার। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত চীনের গণটিকাদান কর্মসূচিতে ১৪০ কোটি টিকার ডোজ ব্যবহার করা হয়েছে।

বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ চীনে কত শতাংশ মানুষকে এখন পর্যন্ত টিকার আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে তা অবশ্য এখনও সরকারিভাবে ঘোষণা করা হয়নি, তবে গত মাসে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন চ্যানেল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত চীনের মোট জনসংখ্যার অন্তত ৪০ শতাংশ করোনা টিকার একটি ডোজ নিয়েছেন।

চীনের সরকারি স্বাস্থ্য সেবা কর্তৃপক্ষ ন্যাশনাল হেলথ কমিশনের উপপরিচালক জেং ইক্সিন সিনহুয়া নিউজকে জানিয়েছেন, চলতি বছর দেশের ৭০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনার লক্ষ্য নিয়েছে দেশটির সরকার।

সূত্র : রয়টার্স

এসএমডব্লিউ/জেএস