গত জানুয়ারির পর একদিনে চীনে করোনাভাইরাসে সর্বোচ্চ সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়। দেশটির ইউনান প্রদেশে বিদেশ ফেরতদের করোনার সংক্রমণ ব্যাপক বৃদ্ধি এবং এই প্রদেশের সীমান্ত সংলগ্ন প্রতিবেশি মিয়ানমারে সংক্রমণ উদ্বেগজনকহারে বৃদ্ধি পাওয়ায় চীনে নতুন করে প্রকোপ শুরু হয়েছে।

মঙ্গলবার চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চীনের মূল ভূখণ্ডে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৬৫ জনের করোনা আক্রান্তের তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। গত ৩০ জানুয়ারির পর দেশটিতে একদিনে এটাই সর্বোচ্চ সংক্রমণ; ওইদিন চীনে ৯২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল।

এর আগে, সোমবার দেশটিতে ৩১ জনের  করোনা শনাক্ত হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় যারা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন; তাদের বেশিরভাগই বিদেশ ফেরত। শুধুমাত্র ইউনান প্রদেশেই বিদেশ ফেরত ৪১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে; তাদের সবাই চীনা নাগরিক এবং সম্প্রতি মিয়ানমার থেকে দেশে ফিরেছেন।

জাতিসংঘ বলছে, সেনা-নিয়ন্ত্রিত মিয়ানমারে উদ্বেগজনকহারে সংক্রমণ বৃদ্ধি ঠেকাতে লড়াইয়ের প্রচেষ্টা জোরদার করেছে তারা। মিয়ানমারের সরকারি টেলিভিশন এমআরটিভি বলেছে, সোমবারও মিয়ানমারে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে রেকর্ড ২৮১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে এবং সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ৫ হাজার ১৮৯ জনের।

ইউনান প্রদেশে সম্প্রতি করোনায় যে উত্থান দেখা গেছে তার শুরু হয়েছে গত ৪ জুলাই। আর এই সংক্রমণের কেন্দ্রে আছে মিয়ানমার সীমান্ত সংলগ্ন ইউনানের ছোট দুই শহর রুইলি এবং লংচুয়ান। করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর রুইলি বর্তমানে সংক্রণের চতুর্থ ঢেউ মোকাবিলা করছে। এই শহরে গত ২৪ ঘণ্টায় স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত হয়েছেন ৭ জন। অন্যদিকে লংচুয়ানে একজনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।

ইউনানের মূল ট্রানজিট কেন্দ্র রুইলির সঙ্গে লাওস, মিয়ানমার এবং ভিয়েতনামের সঙ্গে ৪ হাজার কিলোমিটার সীমান্ত আছে। ইউনান প্রদেশে করোনার প্রাদুর্ভাবের দ্বিতীয় ঢেউ চলছে; যেখানে অতি-সংক্রামক ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের আধিপত্য দেখা গেছে। এর আগে গত মে এবং জুন মাসে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় গুয়াংডং প্রদেশেও একই ধরনের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়।

রোববার রুইলি সফরে গিয়ে ইউনান প্রদেশের ভাইস-গভর্নর সেখানে করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে শক্তিশালী ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

এদিকে, চীনের মূল ভূখণ্ডে গত ২৪ ঘণ্টায় অ্যাসিম্পটোমেটিক করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে ১৯ জনের। যা তার আগের দিনের (১৭ জন) তুলনায় বেশি। অ্যাসিম্পটোমেটিক সংক্রমণকে করোনা আক্রান্ত হিসেবে গণনা করে না চীন।
 
২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর প্রথমবারের চীনের উহানে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস শনাক্ত হয়। এরপর থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট ৯২ হাজার ৩৪২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং মৃত্যুর সংখ্যা ৪ হাজার ৬৩৬ জনে আটকে আছে।

এসএস