ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে অবস্থিত রোহিঙ্গা মুসলিমদের শরণার্থী শিবিরের অস্থায়ী একটি মসজিদ ভেঙে দিয়েছে দেশটির পুলিশ ও বেসামরিক কর্তৃপক্ষ। ওই শরণার্থী শিবির ভয়াবহ আগুনে পুড়ে যাওয়ার কয়েক সপ্তাহ পর মসজিদ ভেঙে ফেলা হয়েছে বলে শরণার্থীরা জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টার দিকে রাজধানী নয়াদিল্লির মদনপুর খাদের এলাকায় অবস্থিত রোহিঙ্গাদের শরণার্থী শিবিরে ত্রিপল এবং বাঁশের খুঁটিতে নির্মিত একটি অস্থায়ী মসজিদ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রতিবেশি মিয়ানমারে কঠোর সামরিক অভিযানের মুখে পালিয়ে আসা ওই শরণার্থী শিবিরের ৩০০ রোহিঙ্গা আলজাজিরাকে বলেছেন, কর্তৃপক্ষের কাছে মসজিদটি ভেঙে না ফেলার আহ্বান জানানো হলেও তা কর্ণপাত করা হয়নি। শরণার্থী শিবিরের রোহিঙ্গারা বলেছেন, সেখানে নামাজ আদায়ের আর কোনও স্থাপনা নেই।

শাস্তির আশঙ্কায় পুরো নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৩৩ বছর বয়সী মোহাম্মদ নামের এক রোহিঙ্গা বলেন, মসজিদটি ফজরের নামাজ আদায়ের এক ঘণ্টা পর গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

তিন বলেছেন, তারা প্রথমে টয়লেট এবং ওয়াশরুম ধ্বংস করেছে। একটি হস্তচালিত পানির পাম্প উপড়ে ফেলেছে। তারপর মসজিদটি গুঁড়িয়ে ফেলা হয়েছে— এসব কিছুই করা হয়েছে মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে।

মোহাম্মদ বলেছেন, শরণার্থীরা প্রতিবাদ করার চেষ্টা করলে কর্মকর্তারা বলেন, তারা জমি দখল করে শিবিরে বসবাসকারী ‘অবৈধ অভিবাসী’। আমি তাদের বলেছি, এটা আমাদের প্রার্থনার জায়গা। কিন্তু তারা বলেছেন, আপনি বেশি কথা বলছেন।

তিনি বলেছেন, হিন্দুদের কাছে মন্দির যেমন, আমাদের কাছে মসজিদও তেমন। তারা যা করেছে তা পুরোপুরি ভুল। কিন্তু আমরা ক্ষমতাহীন।

রোহিঙ্গা শিবিরের পার্শ্ববর্তী কালিন্দি পুলিশ স্টেশনের এক কর্মকর্তা আলজাজিরাকে বলেছেন, ভেঙে ফেলা অবকাঠামোটি মসজিদ ছিল না। এটি নড়বড়ে একটি কুঁড়েঘর ছিল। এ বিষয়ে আর কোনও প্রশ্নের জবাব দিতে রাজি হননি তিনি।

ওই এলাকার মহকুমা মেজিস্ট্রেট প্রবীর সিং বলেছেন, তিনি মসজিদ ভেঙে ফেলার বিষয়ে জানেন না। এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিবৃতি দেওয়ার এখতিয়ার তার নেই বলে জানান।

দিল্লির কাছের ওই শিবিরে ৫০টির বেশি রোহিঙ্গা পরিবারের বসবাস। গত ১৩ জুন জীর্ণশীর্ন ওই শিবির ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যায়। ২০১৮ সালের পর দ্বিতীয়বারের মতো এই শিবিরটি আগুনে ছাই হয়ে যায়। শিবিরের প্রবেশ মুখে ছোট একটি এলাকায় মসজিদটিও আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।

এসএস