ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠান এনএসও গ্রুপের তৈরি করা স্পাইওয়্যার পেগাসাস ব্যবহার করে বিশ্বজুড়ে মানবাধিকারকর্মী, সাংবাদিক, আইনজীবী, রাজনীতিকদের ফোনে নজরদারি চালানোর ঘটনা সম্প্রতি ফাঁস হয়েছে। অভিযোগ ছিল, পেগাসাস দিয়ে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর ফোনেও আড়িপাতা হয়েছে। আর তাই কোনো ঝুঁকি না নিয়ে ফোনই বদল করে ফেলেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট।

সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে জানিয়েছে, একদিন আগেই পেগাসাসের নির্মাতা ইসরায়েলের সংস্থা এনএসও জোর দিয়ে জানিয়েছিল যে, ম্যাক্রোঁর ফোনে আড়িপাতা হয়নি। কিন্তু একটি ফরাসি সংবাদপত্র জানিয়েছিল, আড়িপাতার তালিকায় প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর নাম আছে। এরপরই তিনি তার ফোন বদল করে ফেলেন।

এক ফরাসি কর্মকর্তা বার্তাসংস্থা এএফপি’কে জানিয়েছেন, ‘প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর অনেকগুলো নাম্বার আছে। তার মানে এই নয় যে, তার ফোনে আড়িপাতা হচ্ছিল। বলতে পারেন, অতিরিক্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

এদিকে বৃহস্পতিবার সাইবার-নিরাপত্তা নিয়ে জরুরি বৈঠক ডেকেছিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ফরাসি সরকার এখন সাইবার-নিরাপত্তাকে আরও মজবুত করতে চাইছে।

এর আগে গত মঙ্গলবার ফরাসি সংবাদপত্রের রিপোর্টে বলা হয়েছিল, পেগাসাস দিয়ে যে সব মোবাইলকে টার্গেট করা হয়েছিল, তার মধ্যে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ ও উচ্চপদস্থ অফিসারের ফোনও আছে।

ফোন নম্বরের এই তালিকা আসলে ১৭টি সংবাদমাধ্যমের কনসর্টিয়ামকে দিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং ফরবিডন স্টোরিস। মরক্কো এই অভিযোগ অস্বীকার করে দুই সংগঠনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।

ব্রিটেনের প্রভাবশালী পত্রিকা গার্ডিয়ানসহ ১৬টি সংবাদপত্রের অনুসন্ধানের মধ্য দিয়েই পেগাসাস কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসে। এনএসও গ্রুপ থেকে এই স্পাইওয়্যার কিনে ‘কর্তৃত্ববাদী’ সরকারগুলো নিজের দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ওপর নজরদারি চালিয়ে আসছে বলেও জানানো হয়েছে।

বিশ্বের প্রায় যে প্রায় ৫০টি দেশে ৫০ হাজারেরও বেশি মোবাইল ফোনে ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠান এনএসও‘র তৈরি পেগাসাস নামের সফটওয়ারটি ঢুকিয়ে নজরদারির নজির এই অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে। তাছাড়া এনএসও’র সংগ্রহ করা তথ্যে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থার প্রবেশাধিকার আছে কি না, সে প্রশ্নও উঠেছে।

যদিও ইসরায়েল এবং এই নজরদারি প্রতিষ্ঠান উভয়ই এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

টিএম