নজিরবিহীন বন্যায় অর্ধশতাধিক মানুষের মৃত্যুর মাত্র কয়েকদিন পর চীনের পূর্বাঞ্চলীয় উপকূলে আঘাত হেনেছে ই‌ন-ফা নামের ভয়ঙ্কর এক টাইফুন। বাংলাদেশ সময় রোববার সাড়ে দশটায় ঝৌশান শহরের উপকূলে ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলে আছড়ে পড়ে।

টাইফুনটি ঘণ্টায় ১৫ কিলোমিটার গতি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বলে দেশটির আবহওয়া দফতর জানিয়েছিল। ইন-ফার বাতাসের বেগ প্রতি সেকেন্ডে সর্বোচ্চ ৩৮ মিটার বলে জানিয়েছেন তারা। রয়টার্সের হিসাবে যা ঘণ্টায় ১৩৭ কিলোমিটারে প্রায় সমান।

ইন-ফা দুপুরের মধ্যে ঝেজিয়াং উপকূল থেকে উত্তরে অগ্রসর হয়ে সাংহাই হয়ে সন্ধ্যার মধ্যে উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় জিয়াংসু প্রদেশে পৌঁছাবে বলে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। জাপানের আবহাওয়া সংস্থা বলছে, ঝড়টি পশ্চিমে হাংঝু শহরের দিকে অগ্রসর হবে।

এর আগে পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল, শক্তিশালী এই টাইফুন উপকূলে আছড়ে পড়ার পর বন্যা ও ভূমিধস হতে পরে। আর এ সময় এর গতি হতে পারে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৯৩ কিলোমিটার। এতে অঞ্চলটিতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

চীনের আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে যে, টাইফুন ইন-ফার প্রভাবে রোববার থেকে দীর্ঘ সময় ধরে ভারি বৃষ্টিপাত হতে পারে। ভারি বৃষ্টির সঙ্গে প্রবল বাতাস আর উত্তাল ঢেউ সামাল দিতে কর্তৃপক্ষসহ সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। 

ফ্লাইট বাতিল ও ট্রেন চলাচল বন্ধ দেওয়া হয়েছে। ঘরের ভেতরে থাকতে বলা হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। প্রবল বাতাস ও সমুদ্র উত্তাল হওয়ার সঙ্গে বন্যারও শঙ্কা করা হচ্ছে। সাংহাইয়ের ব্যস্ত বন্দর থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে শত শত জাহাজ ও নৌযান।

অন্তত কয়েকদিন চীনের বন্যাকবলিত ওই অঞ্চলে আরও ভারী বৃষ্টির শঙ্কা করা হচ্ছে। সরকারি কর্মকর্তাদের আশঙ্কা, এতে বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের উদ্ধার কার্যক্রম ও পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার যে প্রচেষ্টা তা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে।

ওই বন্যায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ এবং তাতে অন্তত ৫৮ জন মানুষের প্রাণহানির মধ্যেই টাইফুন আঘাত হানল। জরুরি সেবা বিভাগের কর্মীরা এখনো দিনরাত জীবিতদের উদ্ধারে কাজ করছেন। খাদ্যসহ অন্যান্য ত্রাণ পৌঁছে দিচ্ছেন বন্যা দুর্গতদের। 

এএস