বিদেশে বসবাসরত নাগরিকদের দেশে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে অস্ট্রেলিয়া। শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার।

বিজ্ঞপ্তিতে এই নিষেধাজ্ঞার কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক ধরন ডেল্টার প্রকোপে অস্ট্রেলিয়ায় সম্প্রতি করোনা সংক্রমণ ব্যাপকভাবে বাড়ছে। সংক্রমণে নিয়ন্ত্রণ আনতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

আরও বলা হয়, দেশের অন্তত ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনার আগ পর্যন্ত প্রবাসী অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক এবং বিদেশিদের জন্য দুয়ার খোলার পরিকল্পনা আপাতত নেই সরকারের।

বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় করোনা টিকার ডোজ সম্পূর্ণ করেছেন মোট জনসংখ্যার মাত্র ১৯ শতাংশ।

এর আগে,মহামারি শুরু হওয়ার অল্প কিছুদিনের মধ্যেই বিদেশি নাগরিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল অস্ট্রেলিয়া। পাশাপাশি দেশের নাগরিকদের এক রাজ্য থেকে অন্যরাজ্যে ভ্রমণে কড়াকড়িও আরোপ করা হয়েছিল এবং প্রতিদিন নির্দিষ্ট সংখ্যক প্রবাসী নাগরিককে দেশে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।

বিদেশী নাগরিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়েছিল, অত্যন্ত জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত কোনো বিদেশী নাগরিকদের প্রবেশকে নিরুৎসাহিত করছে সরকার।

এবার বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত নিজ দেশের নাগরিকদের জন্যও একই নিয়ম জারি করল অস্ট্রেলিয়া।

এদিকে, সরকারের এই নতুন বিজ্ঞপ্তিতে ব্যাপক ক্ষুব্ধ হয়েছেন দেশটির জনগণের একাংশ। সরকারি এই নীতিকে ‘বর্বরোচিত’ বলে উল্লেখ করেছেন তারা।

অস্ট্রেলিয়ার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফরমসমূহ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ও সমালোচনায় ছেয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত অস্ট্রেলীয় নাগরিক আলেক্সান্দ্রা ফেলান এক টুইটবার্তায় বলেন, ‘ঘুম থেকে উঠেই এই সংবাদ পড়ে বুঝতে পারলাম- আমরা, প্রবাসী অস্ট্রেলিয়ানরা নিজ দেশ থেকে নির্বাসিত হয়েছি।’

অস্ট্রেলিয়ার অনেক আইনজীবী ও সংবিধানবিশেষজ্ঞ ইতোমধ্যে অভিযোগ করেছেন, নতুন এই নীতি গ্রহণের মাধ্যমে নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘণ করেছে সরকার।

সরকারের তরফ থেকে অবশ্য নাগরিক ক্ষোভের কোনো প্রতিক্রিয়া এখন পর্যন্ত জানানো হয়নি।

করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে মহামারির শুরু থেকেই লকডাউনসহ কঠোর বিধিনিষেধ জারি করেছিল অস্ট্রেলিয়ার সরকার। তার সুফলও পাওয়া যাচ্ছিল; কিন্তু ডেল্টা ধরনের প্রকোপে সেসব অর্জন এখন হুমকির মুখে বলে জানিয়েছেন দেশটির চিকিৎসক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

করোনায় বর্তমানে সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় আছে অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলেসের রাজধানী ও দেশটির বৃহত্তম শহর সিডনি, যেখানে দেশটির মোট জনসংখ্যার এক পঞ্চমাংশের বসাবাস। গত এক মাসে শহরটিতে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৪ হাজার ৩০০ ছাড়িয়েছে।

করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে দেশটির মোট ২ কোটি ৬০ লাখ জনসংখ্যার অর্ধেকই লকডাউনে গৃহবন্দি অবস্থায় আছেন।

সূত্র : বিবিসি

এসএমডব্লিউ