আরও কাছে তালেবান, যা ঘটতে যাচ্ছে কাবুলে
বিদ্রোহী গোষ্ঠী তালেবান আফগানিস্তানের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বৃহত্তম শহর এবং রাজধানী কাবুলের দক্ষিণের সীমান্ত লাগোয়া আরেক শহরের দখল নিয়েছে। তাদের দৃষ্টি এখন রাজধানী কাবুলের দিকে। কাবুলের ১১ কিলোমিটারের এলাকার ভেতরে শনিবার ঢুকে পড়ায় এই শহরের পতনের শঙ্কা আরও ঘনীভূত হয়েছে।
কাবুল বর্তমান পরিস্থিতি এবং আগের হামলার কিছু তথ্য এখানে...
বিজ্ঞাপন
চলমান পরিস্থিতি
• মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই শহরটিতে ঢুকে পড়তে পারে তালেবান বিদ্রোহীরা। তালেবানের হামলা বৃদ্ধি পাওয়ায় ৫০ লাখ মানুষের এই শহরে নতুন করে লাখ লাখ মানুষ দেশের অন্যান্য অংশ থেকে পালিয়ে এসেছেন। নিজ দেশের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেওয়ার কাজ নিরাপদ করতে কাবুলের বিমানবন্দর এবং দূতাবাসে অবস্থান নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের হাজার হাজার সৈন্য।
বিজ্ঞাপন
• আফগান সামরিক বাহিনী রাজধানী কাবুল রক্ষার অঙ্গীকার করেছে।
• কাবুলের আয়তন প্রায় এক হাজার বর্গ কিলোমিটার; যার চারপাশে ঘিরে আছে পাহাড়-পর্বত। শহরটিতে প্রধান চারটি সড়ক আছে। এই শহরগুলো হলো দক্ষিণ-পশ্চিমের ময়দান শাহর, দক্ষিণের পুল-ই-আলম, পূর্বের সুরোবি এবং উত্তরের বাগরাম।
• তেমন কোনও প্রতিরোধ ছাড়াই শনিবার পুল-ই-আল দখলে নিয়েছে তালেবান, বলেছেন প্রাদেশিক পরিষদের স্থানীয় এক সদস্য।
• তালেবান বলেছে, তারা ময়দান শাহর দখলের কাছাকাছি পৌঁছেছে।
ময়দান শাহর উপকণ্ঠের গজনি ইতোমধ্যে দখলে নিয়ে ওই এলাকায় নিজেদের ভারী উপস্থিতি নিশ্চিত করেছে তালেবান। তবে তারা তুলনামূলকভাবে কাবুলের পূর্ব এবং উত্তরে দুর্বল অবস্থানে আছে। যদিও যেকোনও মুহূর্তে সেই পরিস্থিতি দ্রুত বদলে যেতে পারে।
কাবুলে অতীতের হামলা
• ১৯৯৬ সালে পূর্বাঞ্চলের সুরোবি থেকে মুজাহিদীন জোটের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হামলা চালিয়ে কাবুল জয় করেছিল তালেবান। ওই সময় পাকিস্তান সীমান্ত লাগোয়া পূর্বাঞ্চলীয় শহর জালালাবাদ দখল করে তারা। এই জালালাবাদ থেকেও কাবুলে হামলা চালিয়েছিল তালেবানরা। সেই সময় সুরোবিতে লড়াইয়ে জয়ী হওয়ার পর কোনও ধরনের বাধা ছাড়াই কাবুলে পৌঁছে যায় তালেবানের সদস্যরা। তবে জালালাবাদ এখনও আফগান সরকারি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে আছে।
• ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত বাহিনী উত্তরাঞ্চল থেকে হামলা চালিয়ে বাগরাম হয়ে কাবুলে পৌঁছে শহরটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। মার্কিন-সমর্থিত বাহিনীর বিমান হামলায় কাবুলের প্রবেশপথে শত শত তালেবান সদস্য নিহত হয়।
• কাবুল থেকে মাত্র ৬৪ কিলোমিটার দূরে বাগরাম বিমানঘাঁটির অবস্থান। দেশটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই বিমানঘাঁটি মার্কিন সামরিক বাহিনীর মূল আবাস ছিল। গত ২০ বছরের আফগান যুদ্ধে এই ঘাঁটি ব্যবহার করে আসা মার্কিন সৈন্যরা মাত্র এক মাস আগে খালি করেছে। বর্তমানে আফগান সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বাগরাম ঘাঁটি।
শক্তি এবং আলোচনা
• তালেবানের বিমান শক্তি নেই। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দেশের অর্ধেকের বেশি প্রাদেশিক রাজধানীর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে স্থল হামলার পর গোলাবারুদ এবং রকেট ছুড়ে।
• সরকার এবং তালেবানের মধ্যে রাজনৈতিক সমাধানের কোনও চুক্তি হলেই কেবল কাবুলে রক্তাক্ত লড়াই এড়ানো যেতে পারে।
• বিদ্রোহী এই গোষ্ঠী জোর দিয়ে বলেছে যে, তারা প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি নেতৃত্বাধীন সরকারের সঙ্গে কোনও ধরনের সমঝোতায় যাবে না।
• গনিও সরে যাওয়ার কোনও ইঙ্গিত দেননি। শনিবার তিনি বলেছেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে তিনি স্থানীয় নেতা এবং আন্তর্জাতিক সহযোগীদের সঙ্গে জরুরি আলোচনায় আছেন। নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষাবাহিনীর পুনর্গঠনই আমাদের প্রধান অগ্রাধিকার।
সূত্র: রয়টার্স।
এসএস