আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র কেবল নিজের স্বার্থ দেখেছে, অন্য কারো কথা বিবেচনা করেনি। সোমবার জার্মানির বার্লিনে নিজের রাজনৈতিক দল সিডিইউয়ের এক বৈঠকে এ মন্তব্য করেছেন জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মেরকেল।

বৈঠকে মেরকেল বলেন, ‘আমরা বরাবরই বলে এসেছি, আফগানিস্তানে ততদিনই ন্যাটো সৈন্যদল থাকবে, যতদিন দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্র থাকবে।’

‘গত ২০ বছর এমনই চলছিল। হঠাৎ করেই কারো সঙ্গে কোনো আলোচনা না করে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার করা শুরু করল যুক্তরাষ্ট্র। ফলে আমাদেরও ন্যাটো সেনাদের প্রত্যাহার করে নিতে হয়েছে।’

‘এই ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র কেবল নিজের স্বার্থ দেখেছে, অন্য কারও কথা বিবেচনায় আনেনি; এবং তার পরিণতি আজ আমরা চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি।’

‘আফগানিস্তানে যারা নিজেদের ভবিষ্যত নিজেদের মতো করে গড়ে তুলছিল, তারা এবং নারীরা চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। আমি জার্মানির প্রতিবেশী দেশসমূহকে আহ্বান জানাচ্ছি, আফগানিস্তানের বিপদগ্রস্ত মানুষদের প্রতি যেন তারা সহানুভূতিপূর্ণ হন।’

২০০১ সালে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী আল কায়দা নেটওয়ার্ক নিউইয়র্কে টুইন টাওয়ারে হামলার পর আফগানিস্তানে অভিযান শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো সেনাবাহিনী। সেই অভিযানের প্রায় ২০ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পর চলতি বছর এপ্রিলে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

বাইডেন এই ঘোষণা দেওয়ার মাসখানেকের মধ্যে, মে থেকে আফগানিস্তান দখলে অভিযানে নামে তালেবানগোষ্ঠী এবং অবিশ্বাস্য দ্রুতগতিতে দেশের ৩৪ টি প্রদেশের মধ্যে ২৮টির দখল নিতে সক্ষম হয়। রোববার দেশটির রাজধানী কাবুলেরও দখল নিয়েছে তালেবান।

এদিকে, কাবুল পুরোপুরি তালেবান দখলে যাওয়ার আগেই আফগানিস্তান থেকে নিজেদের নাগরিকদের সরিয়ে নিয়েছে জার্মানি। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যেসব আফগান নাগরিক কাবুলের জার্মান সেনাবাহিনীর দোভাষী হিসেবে কাজ করতেন, তাদেরও পর্যায়ক্রমে ফিরিয়ে নেওয়া হবে।

এছাড়া দেশটির মানবাধিকার কর্মী ও উন্নয়ন সংস্থার কর্মীরা যদি জার্মানিতে আশ্রয়ের আবেদন করেন, তা ও বিবেচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

সূত্র : এএফপি

এসএমডব্লিউ