আক্রান্ত-মৃত্যুর রেকর্ডের পরদিন লকডাউন শিথিল ফিলিপাইনে
শুক্রবার করোনায় দৈনিক আক্রান্ত-মৃত্যুর রেকর্ড হওয়া সত্ত্বেও পরদিন শনিবার রাজধানী ম্যানিলা ও তার আশপাশের এলাকায় লকডাউন শিথিল করেছে ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় সরকার। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমসমূহের বরাত দিয়ে করা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার এই দ্বীপরাষ্ট্রে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৭ হাজার ২৩১ জন এবং এ রোগে মারা গেছেন ৩১৭ জন মানুষ, মহামারি শুরুর পর থেকে ফিলিপাইনে একদিনে সর্বোচ্চ আক্রান্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড।
বিজ্ঞাপন
দেশটির সরকারি স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত প্রায় দু’ সপ্তাহ ধরে দেশজুড়ে যতসংখ্যক ব্যক্তি করোনা টেস্ট করাতে আসছেন, তাদের ২৬ শতাংশই শনাক্ত হচ্ছেন করোনা পজিটিভ হিসেবে। বর্তমানে দেশটিতে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ১ লাখ ২৩ হাজার ২৫১ জন, যা গত চারমাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।
২০২০ সালে মহামারি শুরুর পর থেকে এশিয়ার যেসেব দেশ করোনায় সবচেয়ে বিপর্যস্ত অবস্থায় আছে তাদের মধ্যে ওপরের দিকে আছে ফিলিপাইন। দেশটির সরকারি তথ্য অনুযায়ী, মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ফিলিপাইনে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১৮ লাখ ৭ হাজার ৮০০ জন এবং মারা গেছেন মোট ৩১ হাজার ১৯৮ জন।
বিজ্ঞাপন
করোনা রোগীদের ভিড়ে ইতোমধ্যে ফিলিপাইনের অধিকাংশ হাসপাতাল ধারণক্ষমতার শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে। সরকারি স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, দেশের হাসপাতালসমূহের আইসিইউ বিভাগের ৭৩ শতাংশ শয্যা রোগীতে পরিপূর্ণ।
এদিকে দেশটির একাধিক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা আল জাজিরাকে জানিয়েছেন, মহামারি, টানা লকডাউন ও কঠোর বিধিনিষেধের ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে অর্থনীতিতে। গত এক বছরে ফিলিপাইনের অর্থনীতি সংকুচিত হয়েছে প্রায় ৯ দশমিক ৫ শতাংশ।
কর্মকর্তারা আরো জানান, বিপর্যস্ত অর্থনীতি মেরামত করতেই লকডাউন শিথিল করা হয়েছে। আপাতত রাজধানী ম্যানিলা সিটি এবং ম্যানিলা পৌর বিভাগের অন্তর্গত ১৬ টি শহরের সবগুলোতে লকডাউন তোলা হয়েছে. পরে ধীরে ধীরে অন্যান্য এলাগাগুলোতেও শিথিল করা হবে।
ফিলিপাইনের নাগরিক রেইনাল্ডো এসকানিল্লা পেশায় একজন বাসচালক। আল জাজিরাকে তিনি বলেন, ‘গত প্রায় এক বছর ধরে প্রতিদিন সর্বোচ্চ অর্ধেক বা তারচেয়েও কমসংখ্যক যাত্রী পরিবহন করেছি। রোজগার একেবারেই কমে গেছে। একটি পেসোও (ফিলিপাইনের মুদ্রার নাম) সঞ্চয় করতে পারিনি।’
সূত্র : আল জাজিরা
এসএমডব্লিউ