আফগানিস্তানের নতুন শাসকগোষ্ঠী তালেবানের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, টুইন টাওয়ারে ৯/১১’র সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে ওসামা বিন লাদেনের সংশ্লিষ্টতার কোনও প্রমাণ নেই। যদিও ওই হামলায় ওসামা বিন লাদেনের জড়িত থাকার অনেক তথ্য-প্রমাণ আছে বলে বিভিন্ন সময় দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

ইসলামি সশস্ত্র গোষ্ঠীর মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ এমন এক সময় এই মন্তব্য করলেন, যখন তারা আফগানিস্তানকে আর সন্ত্রাসী ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার হতে দেবেন না বলে অঙ্গীকার করেছেন। বুধবার এনবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাকারে তিনি বলেন, ‘আমেরিকানদের জন্য যখন ওসামা বিন লাদেন ইস্যু হয়েছিলেন, তখনও তিনি আফগানিস্তানে ছিলেন। যদিও ৯/১১’র হামলার সঙ্গে তার জড়িত থাকার কোনও প্রমাণ নেই।’

তালেবানের এই মুখপাত্র বলেন, ‘এখন আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, আফগানিস্তানের মাটি কারও বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না।’

শেষবার ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানে ক্ষমতায় থাকাকালীন তালেবান বিন লাদেনকে নিরাপদ আশ্রয় দিয়েছিল। ১৯৮০’র দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে মুজাহিদিনদের সাথে যুদ্ধ করেছিলেন। ওই সময় তিনি জঙ্গিগোষ্ঠী আল-কায়েদার নেটওয়ার্ক গড়ে তোলেন।

২০০১ সালে বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্র এবং পেন্টাগনে হামলার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে মনে করা হয় ওসামা বিন লাদেনকে। সেই হামলার পর বিন লাদেনকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর এবং সন্ত্রাসী প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলো গুঁড়িয়ে দেওয়ার দাবি জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ।

কিন্তু বুশের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করলে যুক্তরাষ্ট্র-নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সামরিক বাহিনী এবং আফগান নর্দার্ন অ্যালায়েন্সের হামলায় ক্ষমতাচ্যুত হয় তালেবান।

আফগান সরকারের পতনে আল-কায়েদার পুনরুত্থান ঘটতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সামরিক কর্মকর্তারা। ২০০১ সাল থেকে পশ্চিমা হামলায় দুর্বল হয়ে পড়লেও তালেবানের যোদ্ধারা আফগানিস্তানেই রয়ে গেছেন।

গত এপ্রিলে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আল-কায়েদা আবারও হামলার ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাবে এবং বিভিন্ন অঞ্চলের সংঘাতকে কাজে লাগাতে পারে বলে কংগ্রেসকে সতর্ক করে দেয়। গত জুনে ইসলামি এই জঙ্গিগোষ্ঠী আফগানিস্তানের ৩৪টি প্রদেশের মধ্যে অন্তত ১৫টিতে উপস্থিত আছে বলে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এই আল-কায়েদার বেশিরভাগ সদস্যই আফগানিস্তানের পূর্ব এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশগুলোতে ঘাঁটি গড়ছেন। তালেবান এবং আল-কায়েদার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে এবং তাদের সম্পর্কে ভাঙনের কোনও আলামত নেই বলেও জানায় জাতিসংঘ।

সূত্র: আল-কায়েদা।

এসএস