কাবুলের বিমানবন্দর এলাকায় ভয়াবহ বোমা হামলার পর আফগানিস্তান থেকে মানুষ সরিয়ে নেওয়া বন্ধ করেছে অস্ট্রেলিয়া। শুক্রবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।

অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী ক্যানবেরায় আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে স্কট মরিসন বলেন, ‘আফগানিস্তানে বসবাসরত অস্ট্রেলীয় নাগরিক, দূতাবাস কর্মী ও অস্ট্রেলিয়ার সেনা সদস্যদের ইতোমধ্যে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। এখন সেখানে যে পরিস্থিতি, তাতে আমরা সেখানে এই কার্যক্রম চালানো আর নিরাপদ বোধ করছি না।’

‘এখন আমাদের পরিকল্পনা হলো, আফগানিস্তান থেকে যাদের নিয়ে আসা হয়েছে, তাদের পুনর্বাসন এবং দীর্ঘ সংঘাতের ফলে সহায় সম্বল হারিয়ে যারা অস্ট্রেলিয়ায় এসেছেন, তাদের মানবিক সহায়তা প্রদান সংক্রান্ত দাফতিরক কার্যক্রম শুরু করা।’

কানাডা ও ফ্রান্স বৃহস্পতিবারই আফগানিস্তান থেকে লোক সরানো বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। সেই তালিকায় তৃতীয় দেশ হিসেবে এবার অস্ট্রেলিয়ারও নাম উঠল।

গত ১৮ আগস্ট থেকে কাবুল থেকে নিজেদের নাগরিক ও অস্ট্রেলিয়ার ভিসাধারী বৈধ আফগানদের প্রত্যাহার করা শুরু করেছে অস্ট্রেলিয়া। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বলেন, আফগানিস্তান থেকে ইতোমধ্যে ৪ হাজার ১০০ জনকে সরিয়ে আনা হয়েছে এবং আরও ৮০০ জন পথে আছেন, কাবুল বিমানবন্দরে বোমা বিস্ফোরণের আগেই অস্ট্রেলিয়াগামী ফ্লাইটে উঠেছেন তারা।

অস্ট্রেলিয়ায় যারা এসেছেন বা আসছেন, তাদের মধ্যে কতজন বৈধ ভিসাধারী আফগান আছেন, সেই হিসেব এখনও করা হয়নি বলে জানিয়েছেন স্কট মরিসন। পাশপাশি তিনি বলেছেন, কাবুল বিমানবন্দরে হামলার ফলে কোনো অস্ট্রেলীয় নাগরিক বা দেশটির ভিসাধারী কোনো আফগান মারা গেছেন কি না – তার খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার দিকে কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পরপর দু’টি বিস্ফোরণ ঘটে।  প্রথম বিস্ফোরণটি হয় অ্যাবেই গেটের কাছে, যেখানে মার্কিন ও ব্রিটিশ বাহিনী বিমানবন্দরের দায়িত্বে ছিলেন। হামলার পর গোলাগুলির ঘটনাও ঘটেছে সেখানে।

এর কিছুক্ষণ পরেই দ্বিতীয় বিস্ফোরণ ঘটে ব্যারন হোটেলের পাশে, যেখানে ব্রিটিশ কর্মকর্তারা যুক্তরাজ্যে ভ্রমণ প্রত্যাশী আফগানদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দিচ্ছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, ভয়াবহ এই হামলায় এখন পর্যন্ত ১০৩ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৯০ জনই আফগান নাগরিক ও ১৩ জন মার্কিন সেনা আছেন। নিহত আফগান নাগরিকদের মধ্যে ২৮ তালেবান সদস্য আছেন বলে জানা গেছে।

২০০১ সালে আফগানিস্তানে মার্কিন-ন্যাটো বাহিনী অভিযান শুরুর সময় ন্যাটোর সদস্য দেশ হিসেবে সেখানে অস্ট্রেলিয়াও সেনা পাঠিয়েছিল। দেশটির সরকারি হিসেব অনুযায়ী, ২০০১ সাল ও তার পরবর্তী বছরগুলোতে ৩৯ হাজারেরও বেশি সেনা সদস্য পাঠিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। তাদের মধ্যে ৪১ জন যুদ্ধে মারা গেছেন।

সূত্র : রয়টার্স

এসএমডব্লিউ