শিক্ষকদের টিকাদানে অগ্রাধিকারের আহ্বান ডব্লিউএইচওর
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চলমান টিকাদান কর্মসূচিতে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মচারীদের অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও ইউনিসেফ। সোমবার এক যৌথ বিবৃতিতে এই আহ্বান জানানো হয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
বিবৃতিতে জাতিসংঘভিত্তিক এই দুই সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘বিভিন্ন দেশে বর্তমানে যে টিকাদান কর্মসূচি চলছে, তাতে স্কুল শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মচারীদের অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে ডব্লিউএইচও এবং ইউনিসেফ।’
বিজ্ঞাপন
২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে টিকাদান কর্মসূচি শুরু করেছিল বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। সেই কর্মসূচি শুরুর আগেই টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে যাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে, তার একটি তালিকা তৈরি করে দেশগুলোকে তা সরবরাহ করেছিল ডব্লিউএইচও। এবার সেই তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হয়েছে শিক্ষক-শিক্ষিকা ও স্কুল কর্মচারীদেরও।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ চলতি বছরের গ্রীষ্মের ছুটির পর স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যৌথ বিবৃতিতে ইউনিসেফ ও ডব্লিউিএইচও এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, ‘করোনার অতি সংক্রামক ধরন ডেল্টা ইতোমধ্যে বিশ্বের অধিকাংশ দেশে ছড়িয়ে পড়েছে; কিন্তু তারপরও স্কুলগুলো খুলে দেওয়া উচিত এবং আমরা মনে করি, এক্ষেত্রে কোনো বাধা আসা ঠিক হবে না।’
বিজ্ঞাপন
এ বিষয়ক পৃথক এক বিবৃতিতে ডব্লিউএইচওর ইউরোপীয় শাখা প্রধান হ্যান্স ক্লাগ বলেন, ‘মহামারির কারণে বিশ্বজুড়ে শিক্ষা ব্যবস্থায় যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, ইতিহাসের এমন নজির আর দ্বিতীয়টি নেই।’
‘দীর্ঘদিন ধরে স্কুল বন্ধ থাকার কারণে শিশুদের পড়াশোনার ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্য, সামাজিক দক্ষতা প্রভৃতি ক্ষেত্রেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। আমাদের শিশুদের সুখী রাখা ও তাদেরকে যোগ্য করে তোলার জন্যই স্কুলগুলো খুলে দেওয়া প্রয়োজন।’
চলমান মাহমারি পরিস্থিতিতে স্কুলের পরিবেশে স্কুলশিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু পরামর্শ ডব্লিউএইচও এবং ইউনিসেফ। সেসব হলো – শিক্ষক ও স্কুল কর্মচারীদের টিকাদান, ক্লাসের আয়তন ছোট রাখা, সামাজিক দূরত্ব এবং শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিয়মিত করোনা টেস্ট করানো।
করোনা মহামারির কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বন্ধ থাকা স্কুল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ খুলে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে গত ১২ জুলাই প্রথমবার বিবৃতি দিয়েছিল জাতিসংঘভিত্তিক সংস্থা ইউনিসেফ ও ইউনেস্কো।
সেই বিবৃতিতে ইউনিসেফ ও ইউনেস্কো বলেছিল, ‘করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে গত ১৮ মাসে বৈশ্বিক শিক্ষাব্যবস্থা তছনছ হয়ে গেছে এবং এর প্রধান শিকার হয়েছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের কোটি কোটি শিশু। আমাদের হাতে থাকা তথ্য অনুযায়ী, মহামারির শুরু থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৯টি দেশে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল সম্পূর্ণ বন্ধ আছে এবং এর ফলে ক্ষতির শিকার হচ্ছে এসব দেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে অধ্যয়নরত ১৫ কোটি ৬০ লাখেরও বেশি শিশু।’
সূত্র : এএফপি
এসএমডব্লিউ