ওরা নিষ্ঠুর, বদলাবে কিনা সন্দেহ আছে : মার্কিন জেনারেল
লয়েড অস্টিন (ডান দিকে), মার্ক মিলি (বাম দিকে)
আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের ২০ বছর মেয়াদী ‘সন্ত্রাসবাদ বিরোধী যুদ্ধ’ ব্যর্থ হয়েছে বলে বৈশ্বিক রাজনীতি বিশ্লেষকদের একাংশ যে মত দিয়েছেন, তা একরকম মেনে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ৩১ আগস্ট আফগানিস্তান থেকে ফিরে এসেছে সর্বশেষ মার্কিন সৈন্যদলটি। সেনা প্রত্যাহারের পর বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের সেনা সদর দফতর পেন্টাগনে প্রথমবার সংবাদ সম্মেলন করেছে দেশটির সেনাবাহিনী।
বিজ্ঞাপন
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন ও সেনাবাহিনীর অন্যতম শীর্ষ কর্মকর্তা মার্ক মিলি সেই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মার্ক মিলি বলেন, ‘তালেবান বাহিনী খুবই নিষ্ঠুর এবং গত ২০ বছরে তাদের মধ্যে কোনো পরিবর্তন এসেছে কি না, সে বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে।’
বিজ্ঞাপন
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, আফগানিস্তান থেকে মার্কিন নাগরিক ও ঝুঁকিতে থাকা আফগানদের সরিয়ে আনার ক্ষেত্রে তালেবান বাহিনীর সহযোগিতা কিভাবে নিশ্চিত করেছে মার্কিন সেনা বাহিনী।
এই প্রশ্নের উত্তরে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন বলেন, ‘আমরা স্রেফ একটি ইস্যুতেই তালেবান বাহিনীর সহায়তা চেয়েছিলাম, আর তা হলো- আমরা আমাদের নাগরিক ও আফগান বন্ধুদের নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে সরিয়ে নিতে চাই; এবং তারা এ বিষয়ক সহযোগিতা করেছে।’
তার পাশে উপবিষ্ট মার্ক মিলি তখন এ সম্পর্কে বলেন, ‘যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিকে আসলে আপনাকে যে কোনো কাজ করার সময় মাথায় রাখতে হবে, এর ফলে আপনার মিশন ও বাহিনীর কোনো ক্ষয়ক্ষতি হবে কি না। এক্ষেত্রে আসলে আপনি যেভাবে চান- সেভাবে কাজ সম্পাদনের সুযোগ খুবই কম থাকে।’
আফগানিস্তান থেকে মানুষ প্রত্যাহারের সময় কাবুল বিমানবন্দরে ভয়াবহ আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছে আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস এর খোরাসান শাখা আইএসকে। সেই হামলায় নিহত হয়েছেন ১৩ মার্কিন সেনা সদস্যসহ ১৭০ জন বেসামরিক আফগান।
বৈশ্বিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি এই সন্ত্রাসীগোষ্ঠীকে ঠেকাতে ভবিষ্যতে আফগানিস্তানের সহযোগিতা চাওয়া হবে কি না- সংবাদিকরা প্রশ্ন করলে মার্ক মিলি বলেন, ‘এমনটা হতেই পারে। আইএসের মোকাবিলায় ভবিষ্যতে তালেবান বাহিনীর সঙ্গে যুগপৎভাবে কাজ করার সম্ভাবনা উপস্থিত হবে না- এমন কথা আমরা জোর দিয়ে বলতে পারি না।’
তবে তার পাশে উপবিষ্ট লয়েড অস্টিন এ সম্পর্কে বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে আগে থেকেই কোনো ধারণা বা অনুমান প্রচারের পক্ষপাতী নই। নতুন যে সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর উপস্থিতি সম্প্রতি আফগানিস্তানে দেখা গেছে, তাদের নেটওয়ার্ক সম্পর্কে প্রথমে আমাদের বিশদভাবে জানতে হবে এবং তারপরই তাদের প্রতিহত করার পন্থা বের করতে হবে।’
‘এই কাজের জন্য যেসব পন্থা অবলম্বন করতে হয়ে, তার সবই করা হবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, আফগানিস্তান থেকে মোট ১ লাখ ২৩ হাজারেরও বেশি মার্কিন নাগরিক ও সহযোগী আফগানদের ফিরিয়ে আনা হয়েছে, তবে এখনও আফগানিস্তানে ১০০ থেকে ২০০ মার্কিন নাগরিক রয়ে গেছেন।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স বিভাগের প্রধান এবং উপমন্ত্রী ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড সম্প্রতি জানিয়েছেন, রয়ে যাওয়া সেসব মার্কিন নাগরিক ও অন্যান্য সহযোগী আফগানদের ফিরিয়ে আনতে সম্ভাব্য সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সূত্র : বিবিসি
এসএমডব্লিউ