পৃথিবীর সব প্রাণী নিঃশ্বাসের মাধ্যমে অক্সিজেন নিয়ে প্রশ্বাসের মাধ্যমে দূষিত কার্বন ডাই-অক্সাইড বের করে দিলেও ভারতের এলাহাবাদ হাইকোর্টের একজন বিচারপতি এক্ষেত্রে গরুকে আলাদা মনে করছেন। তিনি বলছেন, গরুই পৃথিবীর মধ্যে একমাত্র প্রাণী যারা নিঃশ্বাসের মাধ্যমে অক্সিজেন নিয়ে প্রশ্বাসের মাধ্যমে অক্সিজেনই ত্যাগ করে। 

শেখর কুমার যাদব নামের এই বিচারপতিই সম্প্রতি গোহত্যার এক মামলায় এক ব্যক্তির জামিন আবেদন নাকচ করে দেন ও গরুকে ভারতের জাতীয় পশু ঘোষণা করা উচিত বলে মন্তব্য করেন।  

জামিন নাকচের ওই একই আদেশে বিচারপতি আরও বলেছেন, ভারতে একটি প্রথা রয়েছে যে, যেকোনো পূজার আয়োজনে ঘি ব্যবহার করা হয়, যা তৈরি হয় গরুর দুধ থেকে। আর এই ঘি সূর্যরশ্মিকে বিশেষ এক শক্তি দেয়, যা শেষ পর্যন্ত বৃষ্টিপাত ঘটায়। 

বিচারপতি যাদব গরুর শ্বাসযন্ত্রের যে অনন্য বৈশিষ্ট্য ও  অসাধারণ গুণাবলী থাকার দাবি করেছেন, উত্তরখন্ডের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র সিংও একসময় এই ধরনের কথাবার্তা বলেছেন। ২০১৯ সালে এক বিবৃতিতে ত্রিবেন্দ্র সিং বলেছিলেন, গরুই একমাত্র স্তন্যপায়ী প্রাণী যারা প্রশ্বাসের মাধ্যমে কার্বন-ডাই-অক্সাইড ত্যাগ না করে অক্সিজেন ত্যাগ করে। 

গরুর দুধ, দই, ঘি, গোমূত্র এবং গোবর থেকে তৈরি পঞ্চগব্য বেশ কিছু রোগ নিরাময়ে সহায়ক বলেও উল্লেখ করা হয়েছে ওই আদেশে। 

আর্য সমাজের প্রতিষ্ঠাতা দিব্যনন্দ সরস্বতীকে উধ্বৃত করে বিচারপতি যাদব আরও বলেন, একটি গাভীর দুধে ৪০০-এর বেশি মানুষ উপকৃত হয়, কিন্তু একটি গরুর মাংস মাত্র ৮০ জন মানুষ খেতে পারে। যিশু বলেছেন, একটি গরু বা ষাঁড়ের প্রাণ নেওয়া একটা মানুষ হত্যার মতোই অপরাধ। 

আদেশে আরও বলা হয়েছে, যেহেতু গরু ভারতীয় সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ তাই এর মাংস খাওয়া এ দেশের কোনো নাগরিকের মৌলিক অধিকার বলে বিবেচিত হতে পারে না। গরুকে ভারতের জাতীয় পশু বলে ঘোষণা দেওয়ার দাবিতে সংসদে আলোচনা শুরুরও তাগাদা দেন বিচারপতি। একইসঙ্গে বলেন, যারা গরুর ক্ষতি করার কথা বলেন তাদের ঠেকানোর জন্য ব্যবস্থা থাকা উচিত। 

আদেশে আরও বলা হয়েছে, বেঁচে থাকার অধিকার অবশ্যই হত্যার অধিকারের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারো স্বাদের আনন্দের জন্য কোনো জীবন কেড়ে নেওয়া যেতে পারে না। 

সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া। 

এনএফ