পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, প্রতিবেশী আফগানিস্তানে দেশটির নারীদের শিক্ষাগ্রহণে বাধা দেওয়া হবে ইসলাম পরিপন্থী। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে ইমরান খান আরও জানিয়েছেন, আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য আফগানিস্তানে নতুন তালেবান সরকারকে পাকিস্তানের শর্ত পূরণ করতে হবে। এই সিদ্ধান্ত আসবে যৌথভাবে।

ইমরান খান আফগানিস্তানের নতুন তালেবান শাসকদের একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠন এবং মানবাধিকারে প্রতি সম্মান জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আফগানিস্তানকে সন্ত্রাসীদের আস্তানা হিসেবে ব্যবহার করতে দেওয়া উচিত হবে না। এসব সন্ত্রাসী পাকিস্তানের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলে দিতে পারে।

গত আগস্টের মাঝামাঝি রাষ্ট্রক্ষমতায় আসীন তালেবান সরকার গত সপ্তাহে মাধ্যমিক বিদ্যালয় খোলার ঘোষণা দিলেও মেয়েদের বাদ দিয়ে শুধু ছেলে শিক্ষার্থী ও পুরুষ শিক্ষকদের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করার অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বিবিসিকে বলেছেন, তিনি বিশ্বাস করেন মেয়েরা শিগগিরই স্কুলে ফিরতে পারবে।

ইমরান খান বলেছেন, ‘তালেবান ক্ষমতায় আসার পর থেকে যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তা খুবই উৎসাহব্যাঞ্জক। আমি মনে করি তারা মেয়েদের স্কুলে যাওয়ার অনুমতি দেবে।’ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী আফগান নারীদের শিক্ষাবঞ্চিত করা নিয়ে এ সময় বলেন, ‘নারীদের শিক্ষিত হওয়া উচিত নয়, এমন ধারণা শুধু ইসলাম নয় এর সাথে কোনো ধর্মের কোনো সম্পর্ক নেই।’

তালেবানকে পাকিস্তান মদদ দেওয়ার অভিযোগের মধ্যে আফগানিস্তানে ক্ষমতার রদবদল নিয়ে ইমরান খান বারবার তালেবানকে সময় দেওয়া কথা বলে এসেছেন। বিবিসিকেও তিনি বলেছেন, ‘তাড়াহুড়ো করে আগাম কিছু বলা যাচ্ছে না।’ ইমরান খান বলেছেন, তিনি আশা করেন ‘আফগান নারীরা শেষ পর্যন্ত তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করবে’। 

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, ‘তালেবান সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে কিনা অন্যান্য প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সেই সিদ্ধান্ত নেবে পাকিস্তান। সব প্রতিবেশী একত্রিত হয়ে দেখবে, তারা (তালেবান) কীভাবে অগ্রসর হয়। তাদের স্বীকৃতি দেওয়া হবে কি না সেটা হবে একটা যৌথ সিদ্ধান্ত।’

সব পক্ষকে নিয়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠনে তালেবানের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যদি তারা সব পক্ষকে নিয়ে এমন সরকার গঠন করতে না পারে তাহলে আজ হোক বা কাল দেশটিতে গৃহযুদ্ধ বাধবে। এর অর্থ একটি অস্থিতিশীল ও বিশৃঙ্খল আফগানিস্তান এবং যা হবে সন্ত্রাসীদের জন্য আদর্শ স্থান। এটা একটা বড় উদ্বেগের বিষয়।’

এএস