বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট একটি গভীর নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে যাচ্ছে বলে সতর্ক করে দিয়েছে ভারতের আবহাওয়া দফতর। নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে এর নাম হবে ‘গুলাব’।

এ সংক্রান্ত আবহাওয়া বুলেটিনে ভারতের আবহাওয়া দফতর বলেছে, শনিবারের মধ্যে নিম্নচাপটির ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টি রোববার রাতের দিকে অন্ধ্র প্রদেশের উত্তরাঞ্চল এবং উড়িষ্যার দক্ষিণাঞ্চল অতিক্রম করবে।

আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তা স্থলভাগে আছড়ে পড়তে পারে। ইতোমধ্যে উড়িষ্যা ও অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গেও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

এর আগে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের নাম ছিল ইয়াস। ক্রমানুসারে, এবারেরটির নাম হচ্ছে গুলাব। পাকিস্তান এ ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করেছে। এর অর্থ গোলাপ জাতীয় ফুল বিশেষ। 

ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ যেভাবে হয়  

২০০৪ সালের আগে ঝড়গুলোকে বিভিন্ন নম্বর দিয়ে শনাক্ত করা হতো। কিন্তু সেসব নম্বর সাধারণ মানুষের কাছে দুর্বোধ্য হওয়ায় ফলে সেগুলোর পূর্বাভাস দেওয়া, মানুষ বা নৌযানগুলোকে সতর্ক করাও কঠিন মনে হতো। এ কারণেই বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরের উপকূলবর্তী অঞ্চলে ঝড়ের নামকরণ শুরু হয়। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র বা অস্ট্রেলিয়া অঞ্চলে ঝড়ের নামকরণ হতো। 

সাগরভেদে সৃষ্ট হওয়া ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করে থাকে রিজিওনাল স্পেশালাইজড মেটেওরোলজিক্যাল সেন্টার (আরএসএমসি) এবং ট্রপিক্যাল সাইক্লোন ওয়ার্নিং সেন্টার (টিসিডব্লিউসি)। ভারত মহাসাগরের উত্তর অংশ, বঙ্গোপসাগর এবং আরব সাগরে সৃষ্ট ঝড়গুলোর নামকরণে আদর্শ পদ্ধতি অবলম্বন করে নয়া দিল্লিতে অবস্থিত আরএসএমসি।  

ক্রান্তীয় ঝড়ের বিষয়ে গঠিত ওয়ার্ল্ড মেটেরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন/ইউনাইটেড নেশনস ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিক প্যানেলের আটটি সদস্য দেশ ২০০৪ সালে ৬৪ নাম প্রস্তাব করে। সেখান থেকে নামকরণ শুরু হয়।  

২০১৮ সালে ৪৫তম সেশনে আরও পাঁচটি দেশ যুক্ত হয়। বর্তমানে প্যানেলে ১৩টি দেশ রয়েছে। দেশগুলো হচ্ছে, বাংলাদেশ, ভারত, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, ইরান, কাতার, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইয়েমেন। গত বছর আম্ফানের মধ্য দিয়ে আগের প্রস্তাবিত নামগুলো শেষ হয়। সদস্য দেশগুলো নতুন করে আরও কতগুলো নামের তালিকা জমা দিয়েছে। সেখান থেকেই গুলাব নামটি নেওয়া হয়েছে। পরবর্তী ঘূর্ণিঝড়গুলোর নাম হচ্ছে- শাহীন (কাতার), জাওয়াদ (সৌদি আরব), আসানি (শ্রীলঙ্কা), সিতরাং (থাইল্যান্ড) ইত্যাদি।

ভারত মহাসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়কে সাইক্লোন বলা হলেও আটলান্টিক মহাসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়কে বলা হয় হারিকেন। অন্যদিকে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়কে বলা হয় টাইফুন।

আরএইচ