চীনে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় কিছু প্রদেশে গত কয়েকদিন ধরে ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিভ্রাট চলছে। কিছু কিছু এলাকার হাসপাতাল ও কল-কারখানার মতো জরুরি স্থাপনায় বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষ হিমশিম খাচ্ছে। এছাড়া অনেক বাসা বাড়িও টানা বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে।

ভূক্তভোগী নাগরিকরা বলছেন, এই বিদ্যুৎ বিভ্রাটের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ তাদের আগে কোনও ধরনের তথ্য জানায়নি। চলমান এই বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি চীনের প্রবৃদ্ধি হ্রাস পেতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাক্স।

ব্যাংকটি বলছে, তারা চলতি বছর চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ৮ দশমিক ২ শতাংশ হতে পারে বলে ধারণা করেছিল। কিন্তু বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে এই হার ৭ দশমিক ৮ শতাংশ হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের প্রভাব পড়েছে চীনের ৪৪ শতাংশ শিল্প কারখানায়।

এর আগে, জাপানের নমুরা, মরগ্যান স্ট্যানলি এবং চায়না ইন্টারন্যাশনাল ক্যাপিটাল কর্পোরেশনও চীনের প্রবৃদ্ধির ব্যাপারে তাদের পূর্বাভাস কমিয়ে দিয়েছিল।

গত কয়েকদিন ধরে কল-কারখানার পাশাপাশি লাখ লাখ মানুষ বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় বসবাস করছেন। লিয়াওনিং, জিলিন এবং হেইলংজিয়াং প্রদেশের বাসিন্দারা স্থানীয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ব্যাপারে অভিযোগ করছেন। তারা বলছেন, বাড়িতে হিটিং চলছে না, ভবনের লিফ্ট বন্ধ, এমনকি রাস্তার ট্রাফিক লাইটও অচল।

দেশটির কিছু কর্মকর্তা বিদ্যুতের এই বিভ্রাটের জন্য দেশজুড়ে কয়লার তীব্র ঘাটতির কথা বলছেন। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং কয়লার ব্যবহার কমানোর অঙ্গীকার করায়; স্থানীয় সরকারগুলোর ওপর চাপ তৈরি হচ্ছে।

বিদ্যুতের জন্য চীন কয়লার ওপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীল। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম বলছে, কয়লার দাম বেড়ে যাওয়ায় সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। দেশটির একটি বিদ্যুৎ কোম্পানি এই ঘাটতি আগামী বছরের বসন্ত পর্যন্ত চলতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছে। তারা বলছে, এটাই হয়তো চীনের ‌‘নিউ নরমাল’ বা ‘নতুন স্বাভাবিক’ অবস্থা।

সূত্র: বিবিসি।

এসএস