ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে সর্বশেষ বিধানসভা নির্বাচনে জয় পেয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস। অন্যদিকে ২০০-র বেশি আসন নিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন থাকলেও ৮০-র গণ্ডি পার হতে পারেনি বিজেপি। আর এরপর থেকেই বিজেপি ছেড়ে শাসকদল তৃণমূলে ফেরার ঢল নেমেছে নেতাকর্মীদের মধ্যে।

রাজ্যটির সর্বশেষ তিনটি উপনির্বাচনেও জয় পেয়েছে তৃণমূল। অন্যদিকে ভরাডুবি হয়েছে বিজেপির। এরপর তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়া বিজেপি নেতাকর্মীদের সংখ্যা যেন আরও বেড়েছে। কোথাও জনসমক্ষে মাইকে প্রচার করে, কোথাও আজীবন তৃণমূলে থাকার শপথ নিয়ে মমতার দলে যোগ দিচ্ছেন বিরোধী নেতাকর্মীরা।

তবে এবার যে ঘটনা ঘটেছে তাতে সৃষ্টি হয়েছে আলোড়ন। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার বিজেপি বিধায়ক আশিস দাস আগেই তৃণমূলে যোগ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। তবে এর আগে কলকাতার কালীঘাটে গিয়ে মাথা ন্যাড়া করে, আদি গঙ্গায় গোসল সেরে বিজেপি করার প্রায়শ্চিত্ত করেছেন তিনি। মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) এই ঘটনা ঘটেছে। বুধবারই তৃণমূলে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে তার।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, ত্রিপুরা থেকে কলকাতায় গিয়ে মঙ্গলবার নিজের পূর্ব ঘোষণা মতোই প্রথমে মাথা ন্যাড়া করান আশিস দাস। এরপর আদি গঙ্গায় গোসলও করেন ত্রিপুরার সুরমা বিধানসভা আসনের এই বিজেপি বিধায়ক। সবশেষে ধর্মীয় রীতি মেনে যজ্ঞও করেন তিনি।

সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের বাইরে দেশটির অন্যান্য রাজ্যেও সংগঠন ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে তৃণমূল। এর ভেতরে ত্রিপুরা অন্যতম। রাজ্যটিতে তৃণমূল নিজের অবস্থান যত শক্ত করার চেষ্টা করছে, ততই প্রকাশ্যে চলে আসছে বিজেপির অন্তঃদ্বন্দ্ব।

সম্প্রতি ত্রিপুরা সিভিল সার্ভিস কর্মকর্তাদের সম্মেলনে গিয়ে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের মন্তব্য আদালত অবমাননার সমান বলে অভিযোগ করেছিলেন বিজেপি বিধায়ক আশিস দাস। শুধু তাই নয়, ভবানীপুর উপনির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিপুল জয়লাভের পরদিনই ওই বিধায়ক জানান, সুদূর ত্রিপুরা থেকে কলকাতার কালীঘাটে গিয়ে বিজেপিতে যাওয়ার প্রায়শ্চিত্ত করবেন তিনি।

বিজেপিকে আক্রমণ করে আশিস দাস ইতোমধ্যেই জানিয়েছেন, কোনটা মুখ এবং কোনটা মুখোশ তা মানুষ বুঝে গেছে। তাই মা-মাটি-মানুষের প্রতি সমর্থন বাড়ছে। দলত্যাগী এই বিজেপি বিধায়ক বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান তিনি।

এদিকে ত্রিপুরা রাজ্যে ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। তা সত্ত্বেও তাদের একজন বিধায়কের কলকাতায় গিয়ে মাথা ন্যাড়া করে তৃণমূলে যোগ দেওয়া বিজেপি শিবিরের কাছে নিঃসন্দেহে বড় একটি ধাক্কা।

টিএম