মুষলধারে বর্ষণ ও বন্যার কারণে চীনের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ শাংজিতে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় ২০ লাখ মানুষ। দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থা সিনহুয়ার বরাত দিয়ে করা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।

গত সপ্তাহ থেকে মুষলধারে বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া শুরু হয়েছে শাংজিতে। এর ফলে প্রদেশটির ৭০ টি জেলা ও শহরে দেখা দিয়েছে বন্যা ও ভূমিধস।

সিনহুয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রবল বৃষ্টি, বন্যা ও ভূমিধসের কারণে প্রদেশটির বিভিন্ন জেলার ১৭ হাজারেরও বেশি ঘর সম্পূর্ণ ভেঙে গেছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরও কয়েক হাজার ঘর।

প্রতিবেশী হেনান প্রদেশে অতিরিক্ত বৃষ্টিতে ৩০০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যুর তিন মাসের মধ্যে বন্যা দেখা দিল শাংজিতে।

গত সপ্তাহ থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে শাংজিতে। চীনের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের বরাত দিয়ে সিনহুয়া জানিয়েছে, যেখানে ১৯৮১ থেকে ২০১০- ২৯ বছরে শাংজির রাজধানী তাইয়ুয়াননে বৃষ্টিপাত হয়েছে মোট ২৫ মিলিলিটার, সেখানে গত সাত দিনে শহরটিতে ১৮৫ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।

চীনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দফতর জানিয়েছে, শাংজির বিভিন্ন জেলা থেকে এ পর্যন্ত ১ লাখ ২০ হাজারেরও বেশি মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে ঝড়ো হাওয়া, বৃষ্টি ও ভূমিধসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উদ্ধার তৎপরতা।

দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত দৈনিক গ্লোবাল টাইমস জানিয়েছে, উদ্ধার তৎপরতায় সহযোগিতা করতে গিয়ে ভূমিধসের কবলে পড়ে শাংজিতে এ পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৪ পুলিশ সদস্য।

তবে এ পর্যন্ত প্রদেশটিতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কতজন মারা গেছেন তা সুনির্দিষ্ট ভাবে জানা যায়নি।

বিবিসি জানিয়েছে, তাইয়ুয়ানে উদ্ধারকারীরা মেগাফোন ব্যবহার করে আটকে পড়া লোকদের বলছেন, “শিশুদের মাথার উপরে তুলে ধরে রাখুন, নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে বৃদ্ধ ও নারীরা অগ্রাধিকার পাবেন। আতঙ্কিত হবেন না, সবাইকে উদ্ধার করা হবে।”

শাংজি একটি গুরুত্বপূর্ণ কয়লা খনি অঞ্চল; কিন্তু বৃষ্টির কারণে চীন সরকার সেখানকার খনি ও রাসায়নিক কারখানাগুলো বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছে।

শাংজিতে অনেক প্রাচীন স্মৃতিস্তম্ভও আছে। বৃষ্টির কারণে সেগুলো বড় ধরনের ঝুঁকির মুখে আছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

এসএমডব্লিউ