জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোকে ২৩ কোটি ২০ লাখ ৪৭ হাজার ডলার আর্থিক সহায়তা দেবে চীন। দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এই ঘোষণা দিয়েছেন। দেশে বিলুপ্তির হুমকিতে থাকা প্রানীর জন্য একটি নতুন অভয়ারণ্য করার প্রকল্প সরকার হাতে নিয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

মঙ্গলবারের এক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ ইউনানের রাজধানী কুনমিংয়ে শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক পরিবেশ সম্মেলন কপ ১৫। সম্মেলনে যোগ দিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে কূটনৈতিক, বিজ্ঞানী ও পরিবেশকর্মীরা পৌছেছেন কুনমিংয়ে। 

বিশ্বজুড়ে প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা বিষয়ক একটি চুক্তির খসড়া প্রস্তুত হওয়ার কথা রয়েছে এই সম্মেলনে। আগামী বছর মে মাসে সেটি চুড়ান্ত করা হবে।

মঙ্গলবার সেই সম্মেলনে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বক্তব্য দেন চীনের প্রেসিডেন্ট। সেখানে অর্থ সহায়তা দানের এই ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, ‘উন্নয়নশীল দেশসমূহ যেন তাদের প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে পারে, সেজন্য সবার এগিয়ে আসা উচিত। চীন বিশ্বাস করে, পারস্পরিক সহযোগিতা ও সংহতি ব্যতীত এই কাজ অনেক কঠিন ও দূরূহ।’

শি বলেন, চলতি এই সম্মেলনের মাধ্যমে কুনমিং বায়োডাইভার্সিটি ফান্ড নামে একটি বৈশ্বিক তহবিল গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যেখানে প্রাথমিকভাবে  ১৫০ কোটি ইউয়ান বা ২ কোটি ৩২ লাখ ৪৬ হাজার ডলার দান করবে চীন। বিশ্বের অন্যান্য রাষ্ট্রকেও এই তহবিলে অর্থ দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

আন্তর্জাতিক পরিবেশ অর্থনীতিবিদরা জানিয়েছেন, বিশ্বজুড়ে প্রকৃতি ও জীবৈচিত্র রক্ষা করতে হলে প্রতি বছর উন্নয়নশীল দেশসমূহকে অন্তত ১ হাজার কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা সরবরাহ করা প্রয়োজন।

ভার্চুয়াল বক্তব্যে শি জিনপিং আরও বলেন, চীনের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলে ইয়াংজি, হোয়াং হো এবং মেকং নদী বিধৌত বিস্তৃত ভূমিতে ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গকিলোমিটার আয়তনের একটি ন্যাশনাল পার্ক বা অভয়ারণ্য করার পরিকল্পনা নিয়েছে দেশটির সরকার। চীনের মোট বন্যপ্রাণীর ৩০ শতাংশেরই বাস ওই অঞ্চলে এবং পান্ডা, বাঘ, চিতাবাঘসহ যেসব প্রাণী বিলুপ্তির হুমকিতে রয়েছে, সেসবের সংখ্যা বাড়ানোর জন্যই এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।

আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকদের একাংশ বলছেন, অর্থ সহায়তার এই প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে নিজেদের প্রভাব আরও এক ধাপ বাড়ানোর কৌশল নিয়েছে বিশ্বের দ্বিতীয় ‍বৃহত্তম অর্থনীতির এই দেশটি।

এসএমডব্লিউ