বাল্যবিবাহের ফলে অল্পবয়সে গর্ভধারণ ও সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে প্রতিদিন বিশ্বজুড়ে মারা যাচ্ছে ৬০ জনেরও বেশি কিশোরী; আর এই মৃত্যুর অর্ধেকই ঘটছে পশ্চিম ও মধ্য আফিকার দেশসমূহে।

শিশু অধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেনের এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছে ভারতের অন্যতম জাতীয় দৈনিক হিন্দুস্তান টাইমস।

সেভ দ্য চিলড্রেনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতি বছর পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকার দেশগুলোতে গর্ভধারণ ও সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মারা যায় ৯ হাজার ৬০০ কিশোরী, যা এ জনিত কারণে বার্ষিক মৃত্যুর প্রায় অর্ধেক। অর্থাৎ প্রতিদিন প্রায় ৩০ জন কিশোরীর মারা যাচ্ছে আফ্রিকায়।

এছাড়া, দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে সন্তান ধারণ ও জন্ম দিতে গিয়ে প্রতি বছর মারা যায় ২০০০ কিশোরী। দৈনিক হিসেবে এই মৃত্যুসংখ্যা ৬ জন।

এছাড়া পূর্ব এশিয়ায় প্রতি বছর মারা যায় ৬৫০ জন এবং লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলে এই সংখ্যা ৫৬০। এই কিশোরীদের সবাই বাল্য বিবাহের শিকার এবং সন্তান ধারণ ও জন্মদান করতে গিয়েই তাদের মৃত্যু হয় বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে সেভ দ্য চিলড্রেন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাল্যবিবাহ বন্ধে গত কয়েক বছর ধরে বিশ্বজুড়ে নানামুখী তৎপরতা চলছিল এবং তাতে কিছু সাফল্য আসাও শুরু করেছিল, কিন্তু করোনা মহামারির কারণে সেসব তৎপরতা অনেকাংশে সীমিত হয়ে পড়ায় ফের উন্নয়নশীল ও আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা দেশগুলোতে বাড়ছে এই সামাজিক সমস্যা। এছাড়া, বিশ্বজুড়ে নারীর প্রতি সহিংসতাও বাড়িয়েছে মহামারি।

২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে আরও এক কোটি কিশোরী বাল্যবিবাহের শিকার হওয়ার ঝুঁকিতে আছে  বলে প্রতিবেদনে শঙ্কা জানিয়েছে সেভ দ্য চিলড্রেন।

আন্তর্জাতিক এই উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রধান নির্বাহী ইঙ্গের অ্যাশিং এক বার্তায় বলেন, ‘কিশোরী অবস্থায় নারীদের সন্তান ধারণ ও জন্মদানের জন্য যথেষ্ট প্রস্তুত থাকে না, এ কারণেই বাল্যবিবাহের শিকার কিশোরীদের মধ্যে মাতৃমৃত্যুর হার বেশি থাকে। এই ক্ষতিকর সামাজিক প্রথা কিশোরীদের প্রধান হত্যাকারী।’

বাল্যবিবাহ বন্ধে উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশসমূহের সরকারদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ও পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন ইঙ্গের অ্যাশিং।

এসএমডব্লিউ