ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের সভাপতি সোনিয়া গান্ধী বলেছেন, তিনিই দলের পূর্ণ-কালীন সভাপতি। শনিবার কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে এই মন্তব্য করেছেন তিনি। দলের ভেতরের সমালোচক— বিশেষ করে জি২৩ নেতাদের উদ্দেশে তিনি এই মন্তব্য করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কংগ্রেসের জি২৩ নেতারা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ‌‌সাংগঠনিক পরিবর্তন, ‘দৃশ্যমান এবং কার্যকর নেতৃত্ব’ নির্বাচনের জন্য চাপ দিয়ে আসছে। কংগ্রেসের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী কর্তৃপক্ষ ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে দেওয়া বক্তৃতায় সোনিয়া গান্ধী বলেন, ‘আমি সবসময় খোলামেলা কথা বলার প্রশংসা করেছি। গণমাধ্যমের মাধ্যমে আমার সঙ্গে কথা বলার দরকার নেই।’

কংগ্রেসের জি২৩ নেতাদের দলের নেতৃত্ব নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি চিঠির উল্লেখ করে সোনিয়া গান্ধী এসব কথা বলেছেন। ওই চিঠি প্রকাশের পর দলটির নেতা-কর্মীদের নেতৃত্ব নিয়ে বিবাদ প্রকাশ্যে আসে।

২০১৯ সালে রাহুল গান্ধী সভাপতির পদ ছাড়ার পর থেকে সোনিয়া গান্ধী দলটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি বলেন, আপনারা যদি অনুমতি দেন, তাহলে আমি কংগ্রেসের পূর্ণকালীন সভাপতি হতে চাই। কৃষক বিক্ষোভ, মহামারি চলাকালীন ত্রাণ সহায়তা এবং দেশের প্রান্তিক গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের ওপর নিপীড়নের মতো জাতীয় ইস্যুতে তার নেতৃত্ব তুলে ধরে এসব কথা বলেন সোনিয়া।

তিনি বলেন, আপনারা জানেন যে, আমি এসব বিষয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিয়ে যাচ্ছি। আমি সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করছি। আমরা জাতীয় ইস্যুতে যৌথ বিবৃতি দিয়েছি এবং সংসদেও আমাদের কৌশল সমন্বয় করেছি। 

কংগ্রেস যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে, সেগুলো নিয়ে খোলামেলা আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন সোনিয়া গান্ধী। গণমাধ্যমের কাছে দলীয় সিদ্ধান্ত ফাঁস করে দেওয়ার বিষয়ে জি২৩ নেতাদের সতর্ক করে দিয়ে সোনিয়া বলেন, ‘...কিন্তু এই ঘরের চার দেওয়ালের বাইরে যা জানানো উচিত তা হল কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত।’

বিভিন্ন সময়ে গুলাম নবী আজাদ, কপিল সিবলের মতো প্রবীণ নেতারা কংগ্রেসের স্থায়ী সভাপতির দাবি তুলেছিলেন। কংগ্রেসের জ্যেষ্ঠ নেতাদের নিয়ে জি২৩ কমিটি গঠিত। বার্তাসংস্থা এএনআইকে গুলাম নবী আজাদ বলেন, সোনিয়া গান্ধীর প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে এবং কেউই তার নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলছে না।

সাংগঠনিক নির্বাচনের সময়সূচি চূড়ান্ত করতে শনিবার কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক করেছে। কংগ্রেসের সূত্র বলছে, আগামী বছরের সেপ্টেম্বরে পূর্ণকালীন কংগ্রেস সভাপতি এবং নতুন পদাধিকারীদের নির্বাচিত করা হবে। 

এসএস