খুনের ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ভারতের বহুল আলোচিত ধর্মগুরু গুরমিত রাম রহিম সিংসহ চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের একটি আদালত। সাজাপ্রাপ্ত অন্যান্যরা হলেন কৃষাণ লাল, জাসবীর সিং, অবতার সিং এবং সাবদিল।

সোমবার ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, কারাদণ্ডাদেশের পাশাপাশি জরিমানাও করা হয়েছে তাদের সবাইকে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, জরিমানা হিসেবে ৩১ লাখ রুপি পরিশোধ করতে হবে রাম রহিম সিংকে। এছাড়া, সাবদিলকে দেড় লাখ, কৃষাণ লালকে ১ লাখ ২৪ হাজার, জাসবির সিংকে ১ লাখ ২৪ হাজার এবং অবতার সিংকে ৭৫ হাজার রুপি জরিমানা করেছেন আদালত।

হরিয়ানায় ডেরা সাচ্চা সাওদা নামে একটি আশ্রমের মালিক ছিলেন গুরমিত রাম রহিম সিং। মামলার বিবরনীতে জানা যায়, প্রায় ২০ বছর আগে খুন হওয়া রণজিৎ সিং ওই আশ্রমের ম্যানেজার ছিলেন এবং এই খুনের সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্ট ছিলেন রাম রহিম। বাকি চারজন ছিলেন তার সহযোগী।

আশ্রমের দুই নারীকর্মীকে ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২০১৭ সাল থেকে হরিয়ানা রাজ্যের রোহতাক জেলার সুনারিয়া কারাগারে আছেন বিতর্কিত ধর্মগুরু রাম রহিম সিং। আদালতে খুনের মামলার বিচার চলাকালে অন্যান্য অপরাধীরা সশরীরে উপস্থিত থাকলেও সার্বিক নিরাপত্তাজনিত কারণে তাকে আদালতে হাজির করেনি পুলিশ। কারাগারে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনি বিচারকাজে যুক্ত হন।

আদালতের রায় অনুযায়ী, জরিমানার অর্ধেক অর্থ দেওয়া হবে রণজিৎ সিংয়ের পরিবারের সদস্যদের।

রায়ঘোষণার দিন রাম রহিমের সেই আশ্রম যে হরিয়ানার যে এলাকায় অবস্থিত- সেই সিরসা ও এই ধর্মগুরুর অন্যতম প্রধান ঘাঁটি এলাকা পঞ্চকুলায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে হরিয়ানা পুলিশ।

ধর্মগুরু গুরমিত রাম রহিম সিংয়ের বিরুদ্ধে বহুসংখ্যক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে। প্রথম এই অভিযোগ উঠেছিল ২০০২ সালে। ওই বছর সিরসাসহ হরিয়ানার বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে দেওয়া বেনামী এক চিঠিতে প্রথম এই বিষয়ে উল্লেখ করা হয়।

সে সময় ডেরা সাচ্চা সাওদার ম্যানেজার ছিলেন রণজিত সিং। মামলার বিবরণীতে বলা হয়, বেনামী ওই চিঠিটি ছড়িয়ে দেওয়ার পেছনে রণজিৎ সিংয়ের হাত রয়েছে- সন্দেহে তাকে গুলি রে খুন করেন রাম রহিমের চার সহযোগী।

আর এই খুনের মূল পরিকল্পনা সাজিয়েছিলেন গুরমিত রাম রহিম সিং নিজে।

এসএমডব্লিউ