ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কেরালায় প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে কমপক্ষে ৩৫ জনে। গত কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টির পর সৃষ্ট দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে রাজ্যটিতে প্রাণহানির সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।

মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা। রাজ্যটিতে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে প্রাণহানির মধ্যেই বিদ্যমান পরিস্থিতিতে নিখোঁজদের উদ্ধারে কেরালায় ভারতীয় সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর সদস্যরা পূর্ণ শক্তি নিয়ে উদ্ধারকাজে অংশ নিয়েছেন। সোমবার তারা রাজ্যটির বিভিন্ন দুর্যোগপীড়িত স্থানে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করেন।

আলজাজিরা বলছে, কেরালার বহু জায়গা জলমগ্ন হয়ে রয়েছে। এছাড়া উপকূলীয় এলাকায় এখনও অনেক মানুষ আটকে রয়েছেন। একইসঙ্গে বহু মানুষ এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। যার কারণে মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।

এই পরিস্থিতিতে কেরালার দু’টি বড় নদীর বাঁধের গেট খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। ফলে পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, যে দু’টি বাঁধের পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে, তার মধ্যে একটি এশিয়ার বৃহত্তম খিলেন বাঁধ ইদ্দুকি। এটি পেরিয়ার নদীর ওপর নির্মিত। অন্যটি ইদামালায়ার বাঁধ। এই বাঁধটিও পেরিয়ারেরই একটি উপনদীর ওপর তৈরি করা হয়েছে।

এদিকে কেরালা রাজ্য প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে উদ্বেগ বেড়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজ্যের অধিকাংশ জেলা যেখানে প্লাবিত সেখানে বাঁধের পানি ছেড়ে দিলে পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে। তবে প্রশাসনের সতর্কবার্তা মেনে চললে সাধারণ মানুষও ক্ষয়ক্ষতি এড়িয়ে চলতে পারবেন বলে জানানো হয়েছে।

অবশ্য শুধু কেরালা নয়। সোমবার উত্তরাখণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ, রাজস্থান, দিল্লি-সহ ভারতের আরও ১০টি রাজ্যে ভারী বৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে উত্তরাখণ্ডে গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি সংক্রান্ত দুর্ঘটনায় পাঁচ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন দু’জন। এছাড়া রোববার রাত থেকে সোমবার সারা দিন হওয়া টানা ভারী বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হিমাচল প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, উড়িষ্যা এবং উত্তরপ্রদেশ।

টিএম