রাশিয়ায় করোনাভাইরাসে একদিনে মৃত্যুর নতুন রেকর্ড হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে এই ভাইরাসে প্রাণ গেছে অন্তত ১ হাজার ২৮ জনের; যা করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ। বুধবার রাশিয়ার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে রেকর্ড প্রাণহানির এই তথ্য দিয়েছে ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপি।

গত কয়েক দিন ধরে দেশটিতে করোনায় দৈনিক মৃত্যুর রেকর্ড হচ্ছে। যে কারণে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দেশজুড়ে এই ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া রোধে নতুন করে বিধি-নিষেধ আরোপের কথা ভাবছেন। দেশটির সরকারি পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৩৪ হাজার ৭৪ জন।

রাশিয়ার সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মহামারির তীব্রতা উপেক্ষা করার অভিযোগ রয়েছে। দেশটিতে মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত করোনায় মারা গেছেন ২ লাখ ২৬ হাজার ৩৫৩ জন; যা ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ।

বুধবার আরও পরের দিকে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন করোনাভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে চলতি মাসের শেষের দিকে দেশব্যাপী এক সপ্তাহের ছুটি ঘোষণা করবেন বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এর আগে, মঙ্গলবার মস্কোর মেয়র সের্গেই সোবিয়ানিন গ্রীষ্মের পর প্রথমবারের মতো শহরটিতে করোনাভাইরাস বিধি-নিষেধ আরোপের আদেশ দিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, রাজধানী মস্কোতে বসবাসকারী টিকা না নেওয়া ষাটোর্ধ্ব বয়সী লোকজন বাড়ি থেকে কাজ করবেন। এছাড়া সেবা খাতের কর্মীদের টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক বলে জানিয়েছেন তিনি। আগামী সোমবার থেকে এসব আদেশ কার্যকর হবে এবং এক সপ্তাহ ধরে বলবৎ থাকবে।

মস্কোর এই মেয়র নিয়োগদাতাদের ৩০ শতাংশ কর্মীকে বাড়ি থেকে কাজ করার অনুমতি দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।

টিকাদান কর্মসূচি থমকে যাওয়ায় রাশিয়ায় করোনাভাইরাসের বিস্তার ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। স্থানীয়ভাবে তৈরি স্পুটনিক-৫ ভ্যাকসিন ব্যাপক সহজলভ্য হওয়ার পরও দেশটির মাত্র ৩৫ শতাংশ মানুষকে এখন পর্যন্ত টিকার পূর্ণ ডোজের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে।

দেশটিতে নতুন করে করোনার প্রাদুর্ভাবের জন্য অবশ্য নাগরিকদেরই দায়ী করছে কর্তৃপক্ষ। গত সপ্তাহে দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী মিখাইল মুরাশকো মহামারির পুনরুত্থানের জন্য জনসাধারণের ‌‘আচরণ’ দায়ী বলে মন্তব্য করেন। একই সময়ে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, টিকা নিয়ে জীবন বাঁচানোর সুযোগ দিতে জনসাধারণের জন্য সবকিছু করা হয়েছে।

গত আগস্টের শেষ পর্যন্ত করোনাভাইরাস সংশ্লিষ্ট অসুস্থতায় রাশিয়ায় চার লাখের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে বলে অন্য এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

এসএস