টানা দ্বিতীয় দিনের মতো তাইওয়ানের আকাশসীমায় ১২টি যুদ্ধবিমানসহ চীনের বিমান বাহিনীর বিমানের একটি বিশাল বহর অনুপ্রবেশ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর আগে শনিবারও চীনের যুদ্ধবিমানের বহর তাইওয়ানের আকাশে প্রবেশ করলে সতর্ক করে দেয় এই দ্বীপ ভূখণ্ডের বিমানবাহিনী।

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন ক্ষমতায় আসার কয়েকদিনের মধ্যে এই দ্বীপে চীন-তাইওয়ানের তুমুল উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন তাইওয়ানকে জোরাল সমর্থন দেয়ার পাশাপাশি অস্ত্রও বিক্রি করেছে। এছাড়া গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের জ্যেষ্ঠ একাধিক কর্মকর্তা তাইওয়ান সফর করায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিল চীন।

গণতান্ত্রিকভাবে শাসিত তাইওয়ানকে নিজ ভূখণ্ড বলে দাবি করে চীন। গত কয়েক মাসে এই দ্বীপের আশপাশে সামরিক কার্যক্রম বৃদ্ধি করেছে দেশটি। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে এই দ্বীপের আশপাশে সাধারণ বিমানের চলাচল অব্যাহত রেখে শত্রুপক্ষের ওপর নজরদারি চালালেও গত কয়েকদিন ধরে যুদ্ধ এবং বোমারু বিমান মোতায়েন করেছে চীন।

তাইওয়ান বলছে, শনিবার তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা অঞ্চলের মূল ভূখণ্ড এবং তাইওয়ান নিয়ন্ত্রিত প্রাটাস দ্বীপপুঞ্জের আকাশে চীনের ৮টি বোমারুবিমান এবং চারটি যুদ্ধবিমানের অনুপ্রবেশের পরদিন দক্ষিণ চীন সাগরের এই একই স্থানে রোববার আরও ১৫টি বিমান উড়িয়েছে বেইজিং।

তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, ছয়টি জে-১০ যুদ্ধবিমান, চারটি জে-১৬এস, দু’টি এসইউ-৩০এস ও একটি নজরদারি যুদ্ধজাহাজ ওয়াই-৮ এবং দু’টি অ্যান্টি সাবমেরিন ওয়াই-৮ পাঠিয়েছে চীন। অনুপ্রবেশ মোকাবিলায় তাইওয়ানও বিমানবাহিনীর সরঞ্জাম মোতায়েন করেছে। 

মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিমান, রেডিও সতর্কতা জারির পাশাপাশি চীনা বহরের ওপর নজরদারি চালাতে প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা মোতায়েন করেছে তাইওয়ান। তবে চীন এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। তবে অতীতে এ ধরনের মিশনের ক্ষেত্রে দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা রক্ষায় সামরিক মহড়া চালানো হয় বলে জানায় চীন।

চীনের এই পদক্ষেপে ওয়াশিংটনের উদ্বেগ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। শনিবার তাইওয়ানের ওপর চাপপ্রয়োগ বন্ধে চীনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে এই দ্বীপের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন অব্যাহত এবং সম্পর্ক আরও গভীর করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে ওয়াশিংটন। 

রোববার মার্কিন সামরিক বাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়, দক্ষিণ চীন সাগরের স্বাধীনতা এগিয়ে নিতে যুদ্ধবিমানবাহী রণতরী ইউএসএস থিওডোর রুজভেল্ট নেতৃত্বাধীন যুক্তরাষ্ট্রের একটি ক্যারিয়ার গ্রুপ সেখানে প্রবেশ করেছে।

গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন জো বাইডেন। মার্কিন নতুন প্রশাসন বলেছে, তাইওয়ানের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের দৃঢ় সমর্থন আছে। অন্যান্য দেশের মতো তাইওয়ানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক না থাকলেও আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, এই দ্বীপ ভূখণ্ডের সুরক্ষায় অস্ত্র সহায়তা দিতে বাধ্য যুক্তরাষ্ট্র।

সূত্র: রয়টার্স।

এসএস