আফগানিস্তান অর্থনৈতিক পতনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে; যা দেশটিকে নতুন রাজনৈতিক সংকটে নিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। শনিবার সুইডেনের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতাবিষয়ক মন্ত্রী পার ওলসন ফ্রিদ সতর্ক করে এ কথা বলেছেন।

পশ্চিমা-বিশ্ব সমর্থিত ক্ষমতাসীন সরকারের পতন এবং কট্টর ইসলামপন্থী গোষ্ঠী তালেবানের ক্ষমতা দখলের পর গভীর সঙ্কটে পড়েছে আফগানিস্তান। তালেবানের ক্ষমতা দখলের পর দেশটিতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের আন্তর্জাতিক সহায়তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই সঙ্কট আরও তীব্র হয়েছে।

দুবাইয়ে রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পার ওলসন বলেন, আমার উদ্বেগের বিষয় হল দেশটি পতনের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে। আর এই পতন আমরা যা ভেবেছিলাম তার চেয়ে দ্রুত ঘটছে। ত্বরিৎগতির অর্থনৈতিক পতন দেশটিতে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরি করতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি।

তালেবান ক্ষমতায় আসার পর ২৭ সদস্য রাষ্ট্রের ইউরোপীয় ইউনিয়ন আফগানিস্তানে তাদের মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি করেছে। তবে দেশটির উন্নয়ন সহায়তা বন্ধ রেখেছে তারা। ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো বিশ্বের অনেক দেশ ও বিশ্ব ব্যাংকও একই ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে।

শুক্রবার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে তালেবানের সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে রেড ক্রস সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, দাতব্য গোষ্ঠীগুলো তাদের সহায়তার মাধ্যমে আফগানিস্তান সমস্যার সাময়িক সমাধান করতে পারে।

মানুষের মৌলিক সেবাপ্রাপ্তি নিশ্চিত করার জন্য আফগান সুশীল সমাজের গোষ্ঠীগুলোর মাধ্যমে প্রচেষ্টা বাড়ানোর দিকে সুইডেন নজর দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন ফ্রিদ। তিনি বলেছেন, নতুন তালেবান শাসকদের বৈধতা না দিয়েই এটা করা সম্ভব। আর এটা অন্যান্য দেশগুলো বুঝানো দরকার।

তবে তিনি বলেছেন, আফগানিস্তানের উন্নয়ন কাজের অর্থ তালেবানের মাধ্যমে দেবে না সুইডেন। ক্ষমতায় ফেরার পর মেয়েদের স্কুলে ফেরার অনুমতি না দেওয়া-সহ বিভিন্ন ধরনের মৌলিক মানবাধিকার রক্ষায় তালেবান ব্যর্থ হয়েছে। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমালোচনার মুখে পড়েছে আফগানিস্তানের নতুন এই শাসকগোষ্ঠী।

বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ কাবুলে তাদের দূতাবাস বন্ধ এবং কিছু দেশ কাতারে স্থানান্তরিত করেছে। ইউরোপীয় দেশগুলো তাদের কাবুল দূতাবাস পুনরায় চালু করতে প্রস্তুত নয় বলে জানিয়েছেন ফ্রিদ। তিনি বলেছেন, আফগানিস্তানে ফিরে যাওয়ার আগে কাতারে আরও কূটনৈতিক মিশন খোলা হবে।

সূত্র: রয়টার্স।

এসএস