পাকিস্তানের নিষিদ্ধ ঘোষিত একটি ইসলামি গোষ্ঠীর হাজার হাজার সদস্য বিক্ষোভ মিছিল থেকে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে। এতে পুলিশ এবং বিক্ষোভকারী— উভয় পক্ষের হতাহত হয়েছে বলে জানিয়েছে নিষিদ্ধ ওই গোষ্ঠী।

বুধবার দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় পাঞ্জাবে তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তানের (টিএলপি) সদস্যদের সঙ্গে পুলিশের এই সংঘর্ষ হয়েছে। পাঞ্জাবের গুজরানওয়ালা জেলার মহাসড়কে বিক্ষোভের সময় সংঘর্ষে পুলিশের অন্তত ৪ সদস্য নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও ২৫৩ জন।

আহত পুলিশ সদস্যদের দু’টি হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে দেশটির জাতীয় দৈনিক ডন।

 এ ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে আগামী ৬০ দিনের জন্য পাক রেঞ্জার্স মোতায়েন করা হয়েছে। 

পাঞ্জাব পুলিশের একজন মুখপাত্র বার্তসংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, টিএলপির কর্মীরা পুলিশের বিরুদ্ধে একে-৪৭, এসএমজি এবং পিস্তল ব্যবহার করেছেন। এ কারণেই পুলিশ বাহিনীতে হতাহতের পরিমাণ এত বেশি।

পৃথক এক বিবৃতিতে তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তান বলেছে, বুধবারের সংঘাতে তাদেরও বেশ কয়েকজন সদস্য নিহত ও আহত হয়েছেন।

এদিকে, পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ রশিদ আহমেদ বুধবার (২৭ অক্টোবর) এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, পাঞ্জাবের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ইতোমধ্যে প্রদেশটিতে আধা সমারিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তারা (আধা সামরিক বাহিনী) পাঞ্জাবে আগামী ৬০ দিন থাকবে। পাঞ্জাবের যে কোনো এলাকায় অভিযান চালানোর অনুমতি তাদের দেওয়া হয়েছে।’

‘টিএলপির উদ্দেশে বলছি, দয়া করে শান্ত হোন। এটি অনুরোধ নয়, সতর্কবার্তা।’

ফ্রান্সের ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপাত্মক ম্যাগাজিন শার্লি হেবদোতে মহানবী (সঃ)য়ের ব্যাঙ্গাত্মক চিত্র প্রকাশের জেরে পাকিস্তান থেকে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কারের দাবিতে এই নিয়ে তৃতীয়বারের মতো ব্যাপকমাত্রায় সহিংসতা হলো পুলিশ ও টিএলপির নেতাকর্মীদের মধ্যে।

২০১৭ সাল থেকে পাকিস্তান থেকে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়ে আসছে টিএলপি। সম্প্রতি রাজধানী ইসলামাবাদেও সমাবেশ করার হুমকি দিয়েছে এই কট্টরপন্থী ইসলামি গোষ্ঠী। বুধবার পাঞ্জাব থেকে রাজধানীর উদ্দেশে যাত্রাও শুরু করেছে গোষ্ঠীটির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী।

পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী সম্প্রতি এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, রাজধানীতে টিএলপির সমাবেশ রুখতে প্রয়োজনে বল প্রয়োগ করবে সরকার।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত যথেষ্ট ধৈর্য্যের পরিচয় দিয়েছি; কিন্তু সবকিছুরই সীমা আছে। যদি রাষ্ট্রের কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করা হয়, সমুচিত জবাব দেওয়া হবে।’

এসএস/  এসএমডব্লিউ