অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জাতীয় ক্ষমতা দখলকারী মিয়ানমারের সেনাবাহিনী তাতমাদৌয়ের বিরুদ্ধে এবার অসহায়-বাস্তুচ্যুতদের ত্রাণ আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার মানবাধিকার সংগঠন ফর্টিফাই রাইটস এনেছে এ অভিযোগ।

বুধবার মিয়ানমারের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ কারেন্নি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ফর্টিফাই রাইটস। এই প্রদেশটি কায়াহ নামেও পরিচিত।

সংগঠনটির বুধবারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি কায়াহতে ফর্টিফাই রাইটস মিয়ানমার শাখার অন্তত ১৪ কর্মীকে গ্রেফতার করেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী।

প্রদেশটিতে সেনাবাহিনী ও সশস্ত্র রাজনৈতিক সংঘাতের কারণে বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য ত্রাণকার্য পরিচালনা করছিল সংগঠনটি। কর্মীদের গ্রেফতারের পাশাপাশি সেসব ত্রাণসামগ্রীও সেনা বাহিনী নষ্ট করেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

আরও বলা হয়েছে, কারেন্নি বা কায়ার বিভিন্ন গ্রামে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালাচ্ছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।

কায়াহর বাস্তুচ্যুত মানুষ, ত্রাণকর্মী ও একাধিখ সশস্ত্র রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে সাম্প্রতিক প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করেছে ফর্টিফাই রাইটস। এ কাজে ২০টিরও বেশি সাক্ষাৎকার নিয়েছে সংগঠনটি।

ফর্টিফাই রাইটসের মিয়ানমার শাখার আঞ্চলিক পরিচালক ইসমাইল উওলফ আল জাজিরাকে এ সম্পর্কে বলেন, ‘ত্রাণসামগ্রী আটকে রাখা, লুটপাট ও ত্রাণকর্মীদের গ্রেফতারের কারণে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আমরা যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনেছি।’

‘ইতোমধ্যে আমরা দেখেছি, আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে হাজির হয়েছে মিয়ানমারের জান্তা। জাতিসংঘ ও আসিয়ানের সদস্যরাষ্ট্রগুলোর উচিত দুর্গত লোকজনদের ত্রাণ কার্যক্রমের নিরাপত্তার জন্য জান্তাকে চাপ দেওয়া এবং যেসব জঘন্য অপরাধ তারা করেছে, সেজন্য তাদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসা।’

ফর্টিফাই রাইটসের অভিযোগ সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানতে মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্রদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল আল জাজিরা; কিন্তু কেউ মন্তব্য করতে রাজি হননি।

চলতি বছর ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক সরকারকে হটিয়ে জাতীয় ক্ষমতায় আসীন হয় দেশটির সেনাবাহিনী; কিন্তু তার পরপরই দেশজুড়ে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন মিয়ানমারের গণতন্ত্রকামী জনগণ।

এই আন্দোলন চলার মধ্যেই বিভিন্ন প্রদেশে ব্যাপকভাবে সক্রিয় হয়ে ওঠে দেশটির জান্তাবিরোধী সশস্ত্র রাজনৈতিক দলগুলো। কারেন্নি বা কায়াহ প্রদেশটিও সেসব প্রদেশের মধ্যে অন্যতম।

ফর্টিফাই রাইটসের তথ্য অনুযায়ী, কারেন্নিতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও সশস্ত্র রাজনৈতিক দলগুলোর সংঘাতের কারণে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ১ লাখেরও বেশি মানুষ।

এসএমডব্লিউ