স্নায়ুযুদ্ধের পর যে কোনো সময়ের তুলনায় বর্তমানে পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে রাশিয়ার আকস্মিক যুদ্ধের ঝুঁকি অনেক বেশি তৈরি হয়েছে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ব্রিটেনের সেনাপ্রধান জেনারেল নিক কার্টার। দেশটির সঙ্গে পশ্চিমের অনেক কূটনৈতিক চ্যানেল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যুদ্ধের ঝুঁকি বেড়েছে বলে ব্রিটেনের সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ এই সেনা কর্মকর্তা মন্তব্য করেছেন।

টাইমস রেডিওকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ব্রিটেনের চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল নিক কার্টার বলেছেন, একটি বহুমুখী বিশ্বের নতুন যুগে উত্তেজনার বৃহত্তর ঝুঁকি তৈরি হয়েছে; যেখানে সরকারগুলো তাদের বিভিন্ন উদ্দেশ্য এবং এজেন্ডার জন্য প্রতিনিয়ত প্রতিযোগিতায় লিপ্ত।

রোববার টাইমস রেডিওতে ব্রিটিশ সেনাপ্রধানের ওই সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হওয়ার কথা রয়েছে। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, আমাদের রাজনীতির কিছু যুদ্ধপ্রবণ প্রকৃতিকে লোকজনকে এমন পরিস্থিতিতে নিতে দেওয়া যাবে না, যেখানে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা ভুল হিসেব-নিকেশের দিকে নিয়ে যায়। আমি মনে করি, এ ব্যাপারে আমাদের সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

সম্প্রতি ইউরোপের পূর্বাঞ্চলে অভিবাসী সংকট ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা শুরু হয়েছে। ইউরোপ ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য রাষ্ট্র পোল্যান্ড সীমান্তে বেলারুশ মানবিক সংকট শুরু করার জন্য হাজার হাজার অভিবাসীকে জড়ো করেছে বলে ইইউ অভিযোগ করার পর এই উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। পোল্যান্ড সীমান্তের এই অভিবাসী সংকট রাশিয়া এবং পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোতে বিবাদ সৃষ্টি করেছে।

শনিবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, কৃষ্ণ সাগরে ন্যাটোর অনির্ধারিত মহড়া মস্কোর জন্য গুরুতর চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। ওই ব্লকের ঘনিষ্ঠ মিত্র বেলারুশ সীমান্তের এই সংকটে রাশিয়ার কিছুই করার নেই বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

কার্টার বলেছেন, কর্তৃত্ববাদী প্রতিদ্বন্দ্বীরা সংকট সমাধানে যে কোনো ধরনের হাতিয়ার ব্যবহার করতে ইচ্ছুক। যেমন— অভিবাসী, গ্যাসের দাম বৃদ্ধি, প্রক্সি বাহিনী অথবা সাইবার হামলা। এখন যুদ্ধের চরিত্র বদলে গেছে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন ব্রিটিশ এই সেনাপ্রধান।

তিনি বলেছেন, স্নায়ুযুদ্ধে বিভক্ত হয়ে যাওয়া দ্বি-মেরু বিশ্ব এবং মার্কিন আধিপত্যের একমুখী বিশ্বকে অনুসরণ করে কূটনীতিকরা এখন আরও জটিল বহুমুখী বিশ্বের মুখোমুখি হয়েছেন। স্নায়ুযুদ্ধের চিরায়ত কূটনৈতিক কৌশল এবং প্রক্রিয়া এখন আর নেই।

সূত্র: রয়টার্স।

এসএস