কৃষি সংস্কার আইন বাতিলের ঘোষণা দেওয়ার পরও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ওপর চাপ অব্যাহত রাখতে লাখ লাখ কৃষক আজও দেশটিতে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছেন। শুধুমাত্র চাল এবং গম নয় বরং সব ধরনের উৎপাদিত পণ্যের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বৃদ্ধির দাবিতে সোমবার কৃষকরা এই গণ-সমাবেশ করেছেন।

এক বছরের বেশি সময় আগে শুরু হওয়া কৃষকদের এই বিক্ষোভ আন্দোলন ভারতের কট্টর হিন্দুত্ববাদী সরকারের জন্য সবচেয়ে গুরুতর রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে কারণে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অনেকটা আকস্মিকভাবে শুক্রবার কৃষি সংস্কার আইন বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন।

দেশটির সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য উত্তর প্রদেশের রাজধানী লখনউতে সর্বশেষ সমাবেশে হাজার হাজার কৃষক জড়ো হয়েছিলেন; যেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) আগামী বছরের শুরুর দিকে রাজ্যের নির্বাচনে ক্ষমতায় বসতে চায়।

গত বছরের শেষের দিকে কৃষি সংস্কার আইন বাতিলে মোদির ওপর চাপ তৈরির লক্ষ্যে দেশটির হাজার হাজার কৃষক নয়াদিল্লির উপকণ্ঠে গণ-আন্দোলন শুরু করেন। সম্প্রতি সেই আইন বাতিলের পর কৃষকদের মাঝে আনন্দ দেখা দিলেও তাদের নেতারা তাৎক্ষণিকভাবে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, সব ধরনের উৎপাদিত পণ্যের সর্বনিম্ন সহায়ক মূল্য নির্ধারণে সরকার আইন তৈরির প্রতিশ্রুতি না দেওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ-সমাবেশ অব্যাহত থাকবে।

সম্প্রতি দেশটির সরকার ন্যূনতম সহায়ক অথবা নির্ধারিত মূল্যে চাল এবং গম ক্রয় শুরু করেছে। কিন্তু সরকারের এই সুরক্ষা উদ্যোগে ভারতের লাখ লাখ কৃষকের মাত্র ৬ শতাংশ সুবিধা পাচ্ছেন।

ভারতীয় কৃষকদের আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী প্রধান সংগঠন রোববার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে লেখা এক খোলা চিঠিতে উৎপাদনের ব্যাপক ব্যয়ের ওপর ভিত্তি করে সকল কৃষকের এবং সব ধরনের কৃষি পণ্যের আইনি সুরক্ষা ও মূল্য নির্ধারণের আহ্বান জানিয়েছে।

এর পাশাপাশি দেশটির কৃষকরা কেন্দ্রীয় সরকারকে খসড়া বিদ্যুৎ বিল প্রত্যাহারের আহ্বানও জানিয়েছে। এই বিল পাস হলে কৃষি জমির সেচে ব্যবহৃত বিনামূল্যের বিদ্যুৎ অথবা ভর্তুকিযুক্ত বিদ্যুতের সুবিধা বাতিল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।

ভারতের শস্য উৎপাদনকারী অন্যতম রাজ্য উত্তরাঞ্চলীয় পাঞ্জাবে কৃষি খাতে বিনামূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে সরকার। তবে দেশটির কিছু রাজ্য কৃষকদের বিদ্যুতে ভর্তুকিও দেওয়া হয়।

সূত্র: রয়টার্স।

এসএস