সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে ভারতের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভার শীতকালীন অধিবেশন। আর এই অধিবেশনেই ‘দা ক্রিপ্টোকারেন্সি অ্যান্ড রেগুলেশন অব অফিশিয়াল ডিজিটাল কারেন্সি বিল, ২০২১’ নামে একটি নতুন বিল আনতে চলেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারে ক্ষমতাসীন দল বিজেপি।

ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, এই বিলে ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার জারি করা ডিজিটাল মুদ্রা তৈরির জন্য উপযুক্ত এবং সুবিধাজনক পরিকাঠামো গঠন করা এবং ভারতে সমস্ত প্রকার প্রাইভেট ক্রিপ্টোকারেন্সি নিষিদ্ধকরণের বিষয়ের উল্লেখ রয়েছে।

কেন্দ্রীয় সরকারে ক্ষমতাসীন দল বিজেপি আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনে মোট ২৬ টি বিল সংসদে পেশ করবে বলে জানিয়েছে ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলো।

সম্প্রতি বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত সিনহার সভাপতিত্বে অর্থনীতি বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটি কয়েকজন স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে ক্রিপ্টো-অর্থনীতির সুবিধা এবং অসুবিধা নিয়ে আলোচনায় বসেছিল। বৈঠকে এই অংশগ্রহণকারীরা এই মর্মে একমত হয়েছিলেন যে, ডিজিটাল মুদ্রাকে বন্ধ করা যাবে না, তবে তার উপর একটি নিয়ন্ত্রিত রাখা আবশ্যক।

ওই বৈঠকের এক সপ্তাহের মধ্যেই এই বিল আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি এবং সঙ্গত কারণেই পুরো বিষয়টিকে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা করছেন দেশটির রাজনীতি বিশ্লেষকরা।

অধিবেশনেই ‘দা ক্রিপ্টোকারেন্সি অ্যান্ড রেগুলেশন অব অফিশিয়াল ডিজিটাল কারেন্সি বিল, ২০২১’ বিলটিতে ভারতে সমস্ত প্রাইভেট ক্রিপ্টোকারেন্সি নিষিদ্ধ করার দিকে জোর দেওয়া হয়েছে। তবে ক্রিপ্টোপ্রযুক্তি ও তার ব্যবহারের প্রচার করার জন্য কিছুক্ষেত্রে ব্যতিক্রমের অনুমতিও দেওয়া হয়েছে।  

পাশাপাশি, ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক দ্বারা অনুমোদিত এক ডিজিটাল মুদ্রা তৈরির জন্য একটি উপযুক্ত এবং সুবিধাজনক কাঠামো তৈরি কথাও উল্লেখ রয়েছে বিলে।

এদিকে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গত সপ্তাহেই ক্রিপ্টোকারেন্সিগুলি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন।

এ সম্পর্কে তিনি বলেছিলেন, এই ক্রিপ্টোকারেন্সি ভুল হাতে পড়া এবং তার জন্য বিশ্বের যুব সম্প্রদায়ের ভবিষ্যৎ নষ্ট হওয়া কখনও উচিত নয়। এই ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে তা নিশ্চিত করার জন্য বিশ্বের সমস্ত গণতান্ত্রিক দেশগুলিকে একজোট হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি।

উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় সরকার এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সম্প্রতি ইঙ্গিত দিয়ে আসছিল যে, সন্ত্রাসবাদে আর্থিক মদত এবং কোনওরকম আর্থিক তছরূপ এড়াতে ক্রিপ্টোকারেন্সি পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার বদলে এটির উপর কড়া নিয়ন্ত্রণ রাখা দরকার।

দিন কয়েক আগেই শোনা যাচ্ছিল, ভারতে ক্রিপ্টোর ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে চিন্তা ভাবনা করছে কেন্দ্র। ক্রিপ্টোকারেন্সিকে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যম বা পেমেন্টের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহারের অনুমতি নাও দিতে পারে কেন্দ্র। তবে এটিকে অনেকটা সোনা, শেয়ার বা বন্ডের মতো করে ব্যবহার করা যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছিল। এক্ষেত্রে সিকিউরিটিজ অ্য়ান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া (SEBI)-কে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে ক্রিপ্টোকারেন্সির উপর নজরদারি চালানোর জন্য।

এসএমডব্লিউ