জান্তাবিরোধী গোষ্ঠীগুলোর সদস্যদের চিকিৎসা দেওয়ায় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী অন্তত ১৮ জন চিকিৎসাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে। বুধবার দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যমে জান্তাবিরোধী গোষ্ঠীকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে উল্লেখ করে চিকিৎসা কর্মীদের গ্রেফতারের খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।

সোমবার দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় কায়াহ রাজ্যের লোইকাও শহরের গির্জায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার হয়। সৈন্যরা সেখানে গিয়ে দেখতে পান, গির্জায় ৭ করোনা রোগীসহ ৪৮ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

জান্তার মুখপত্র গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমার বলছে, ‘সন্ত্রাসী সংগঠনের আহত ব্যক্তি এবং রোগীদের অনুমোদনহীনভাবে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানা যায়।’ তবে প্রতিবেদনে কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর নাম উল্লেখ করা হয়নি। এতে বলা হয়েছে, গ্রেফতারকৃত ১৮ চিকিৎসা কর্মীর বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গত ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে মিয়ানমারের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। দেশটির অনেক স্বাস্থ্য কর্মী নাগরিক অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন এবং অনেকেই জান্তার শাসনের বিরোধিতায় সেনাবাহিনী-পরিচালিত হাসপাতালে কাজ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।

বহু স্বাস্থ্যসেবা স্থাপনা এবং স্বাস্থ্যসেবা কর্মী নিরাপত্তা বাহিনীর লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে বলে মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো জানিয়েছে। তবে দেশটির সেনাবাহিনী কাজে ফেরার জন্য চিকিৎসকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গির্জায় গ্রেফতারকৃত চারজন চিকিৎসক, চারজন নার্স এবং ১০ জন নার্সিং সহকারীর মধ্যে কয়েকজনের বিরুদ্ধে লোকজনকে কাজে ফিরতে অস্বীকৃতি জানাতে উসকানি দেওয়ার অভিযোগ ছিল।

দেশটির বেসরকারি সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারস (এএপিপি) বলছে, অভ্যুত্থানের পর থেকে এখন পর্যন্ত মিয়ানমারে ১ হাজার ৩০০ জন বেসামরিক নিহত ও আরও ১০ হাজারের বেশি মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

যদিও মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী এএপিপির এই ডেটাকে পক্ষপাতদুষ্ট হিসেবে অভিহিত করে প্রত্যাখ্যান করেছে। সামরিক জান্তার একজন মুখপাত্র গত সপ্তাহে বলেছেন, সংঘাতে এখন পর্যন্ত প্রায় ২০০ সৈন্য নিহত হয়েছেন।

সূত্র: রয়টার্স।

এসএস