প্রাণঘাতী রোগ করোনায় এ পর্যন্ত ১ লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে জার্মানিতে। দেশটির প্রধান সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান রবার্ট কোচ ইনস্টিটিউট (আরকেআই) বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে এ তথ্য।

আরকেআইয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে বিশ্বজুড়ে মহামারির শুরুর থেকে এ পর্যন্ত জার্মানিতে করোনায় মারা গেছেন মোট ১ লাখ ৪৮১ জন, এবং এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৫৫ লাখ ৭৫ হাজার ৭৭৫ জন। তার মধ্যে, বৃহস্পতিবার নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৭৩ হাজার ৯৬৬ এবং এ রোগে এই দিন দেশটিতে মারা গেছেন ৩৫১ জন।

আগামী মাসেই জার্মানিতে ক্ষমতাসীন হতে যাচ্ছে নতুন জোট সরকার। দেশটির চারবারের নির্বাচিত চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মের্কেল ইতোমধ্যে রাজনীতি থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে দেশটির করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি নতুন জোট সরকারের জন্য স্বাভাবিকভাবেই চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।

মহামারির শুরু দিকে ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে ছিল জার্মানির করোনা পরিস্থিতি; কিন্তু গত প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে সংক্রমণ-মৃত্যুর উল্লম্ফনের কারণে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের শঙ্কা- খুব দ্রুতই করোনার ইউরোপীয় উপকেন্দ্র হিসেবে স্বীকৃতি পেয়ে যাবে দেশটি।

জার্মানির জরুরি স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলোর জোট ইন্টারডিসিপ্লিনারি অ্যাসোসিয়েশন ফর ইনটেনসিভ কেয়ার অ্যান্ড ইমরাজেন্সি মেডিসিনের প্রেসিডেন্ট গেরনট মার্ক্স বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেন, দেশের বেশ কয়েকটি হাসপাতালের আইসিইউ তো বটেই, সাধারণ ওয়ার্ডেও আর নতুন রোগী ভর্তি করার মতো শয্যা অবশিষ্ট নেই।

পরিস্থিতি মোকাবিলায় অবশ্য কিছু পদক্ষেপ ইতোমধ্যে নিয়েছে সরকার। এসবের মধ্যে রয়েছে- জনগণকে টিকার ডোজ নিতে উৎসাহিত করা, স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য টিকার ডোজ গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা এবং যারা এখনও টিকার ডোজ নেননি, তাদেরকে রেস্তোরাঁ, পানশালা, সিনেমা হল, ব্যায়ামাগারসহ যাবতীয় জনসমাগমপূর্ণ স্থানে যাওয়ার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া।

কিন্তু এত কিছুর পরও দেশটিতে তেমন গতি পাচ্ছে না টিকাদান কর্মসূচি। আরকেআইয়ের তথ্য বলছে, পর্যাপ্ত পরিমাণ টিকার ডোজের মজুত ও সরকারের বারবার আহ্বান ও অনুরোধ সত্ত্বেও জার্মানিতে টিকার ডোজ সম্পূর্ণ করেছেন মাত্র ৬৯ শতাংশ মানুষ।

পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর হিসেবে এই হার বেশ কম। জার্মানির প্রতিবেশী দেশ ফ্রান্সেই টিকার ডোজ সম্পূর্ণ করেছেন মোট জনসংখ্যার ৭৫ শতাংশ।

বুধবার জার্মানির নতুন নির্বাচিত চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ বুধবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘আমরা ভয়ঙ্কর সময় পার করছি। পরিস্থিতি খুবই গুরুতর।’

এসএমডব্লিউ