ভারতের সংসদে শীতকালীন অধিবেশন শুরু হচ্ছে আজ। অধিবেশন চলবে ১৯ দিন। এ অধিবেশন সামনে রেখে গতকাল অনুষ্ঠিত সর্বদলীয় বৈঠকে হাজির ছিলেন না দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আর এ বিষয়টা নিয়েই এখন তার সমালোচনায় মুখর হয়েছেন তার বিরোধীরা। 

মোদির পক্ষে অবশ্য সাফাই গেয়ে বলা হচ্ছে, সর্বদলীয় বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতি কোনো ঐতিহ্যের মধ্যে পড়ে না। 

এমন এক সময় এ অধিবেশন শুরু হতে যাচ্ছে যার মাত্র দিন কয়েক আগেই ব্যাপক আন্দোলনের মুখে বিতর্কিত তিন কৃষি আইন বাতিলে রাজি হয়েছে মোদি সরকার। গতকালের বৈঠকে কৃষকদের দাবি-দাওয়ার বিষয়ও উঠে আসে। 

বিরোধীদের পক্ষে থেকে কৃষকদের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি করা হয়েছে। এছাড়া একটি ঘটনার জন্য স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনির বরখাস্তও দাবি করা হয়। 

রাজ্যসভায় বিরোধী নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেছেন, কংগ্রেস ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের পাশাপাশি তিনটি কৃষি বিল প্রত্যাহার এবং কোভিড ম্যানেজমেন্টের মতো বিষয় তুলেছিল। তিনিও সর্বদলীয় বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর অনুপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।  

সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, আগে এই ধরনের কোনো বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীরা না এলেও নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হাওয়ার পরে নিজে উপস্থিত থেকেছেন। প্রধানমন্ত্রী মোদিই এই ঐতিহ্যের শুরু করেছিলেন। সেই কারণে প্রধানমন্ত্রীর এবারের অনুপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলা সমিচীন নয়। তবে নরেন্দ্র মোদির এই অনুপস্থিতি ঘিরে দলের ভেতরেই প্রশ্ন তুলছেন কেউ কেউ। 

বৈঠক প্রসঙ্গে সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশি বলেন, মোদিজি এই প্রথা চালু করেছিলেন, সর্বদলীয় বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু এবার তিনি থাকতে পারলেন না।

এদিকে এ বৈঠকে তৃণমূল বলেছে, অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, বিএসএফের কাজের পরিধি বাড়ানো এবং পেগাসাস নিয়ে তারা সংসদে আলোচনা চায়।
 
শীতকালীন এই অধিবেশন মোট ২৬টি নতুন বিল আনতে যাচ্ছে মোদি সরকার। এরমধ্যে ‘কৃষি আইন প্রত্যাহার বিল ২০২১’ রয়েছে। প্রথম দিনেই এই সংক্রান্ত বিল আনবে সরকার। তবে সরকার চাইলেও অধিবেশন যে খুব একটা শান্তিপূর্ণ হবে না, সেই ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন বিরোধীরা। তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার করলেও ন্যূনতম সহায়ক মূল্য প্রসঙ্গে কৃষকদের দাবি মানেনি সরকার। আরও কিছু দাবিদাওয়া নিয়ে দিল্লি সীমান্তে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে কৃষক সংগঠনগুলো।  

বিরোধীদের হট্টগোলের জেরে এর আগে বাদল অধিবেশন বার বার ভেস্তে গিয়েছি। এবার যাতে অধিবেশন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা যায় তা নিশ্চিত করতেই গতকালের বৈঠক ডাকা হয়েছিল। 

এদিকে আম আদমি পার্টির নেতা সঞ্জয় সিং সর্বদলীয় বৈঠক থেকে বেরিয়ে যান। তার অভিযোগ, আন্দোলকারী কৃষকদের ন্যূনতম সহায়কমূল্যের দাবি জানাতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সর্বদলীয় বৈঠকে তাকে সেই বিষয় উত্থাপন করতে দেওয়া হয়নি। তিনি আরও বলেন সর্বদলীয় বৈঠকে কোনো বিরোধীদের কোনো কথা বলতে দেওয়া হয়নি। 

এনএফ