আফগানিস্তানের তালেবান ও মিয়ানমারে ক্ষমতাসীন জান্তা সরকারের প্রতিনিধিদের উপস্থিতি জাতিসংঘে কাম্য নয় বলে জানিয়েছেন সংস্থাটিতে কর্মরত কূটনীতিকরা। তবে এই দেশগুলো যদি তাদের পূর্বের প্রতিনিধিদের বহাল রাখে, সেক্ষেত্রে বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করবেন বলে জানিয়েছেন কয়েকজন কূটনীতিক।

বুধবার এক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বুধবার জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্য দেশের প্রতিনিধিরা একটি বৈঠকে বসেছিলেন। সেখানে অধিকাংশ প্রতিনিধি মত দেন- জাতিসংঘের সাধারণ সভায় তারা আফগানিস্তানের তালেবান ও জান্তা সরকারের কোনো প্রতিনিধির উপস্থিতি প্রত্যাশা করেন না।

নিয়ম অনুযায়ী, জাতিসংঘের সদস্যরাষ্ট্রগুলোর সংস্থা ইউএন ক্রিডেনশিয়াল কমিটিতে তাদের এই প্রস্তাব তোলা হবে এবং তারপর এটি আলোচনা হবে জাতিসংঘের সাধারণ সভায়। সেখানেই এ বিষয়ক চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ইউএন ক্রিডেনশিয়াল কমিটির মোট সদস্যসংখ্যা ৯ জন। এই কমিটির সদস্যরাষ্ট্রগুলো হলো রাশিয়া, চীন, যুক্তরাষ্ট্র, বাহামা, ভুটান, চিলি, নামিবিয়া, সিয়েরা লিওন ও সুইডেন।

আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালেবান সরকার জাতিসংঘে আফগানিস্তানের প্রতিনিধি হিসেবে তালেবান মুখপাত্র সোহেল শাহীনকে মনোনীত করেছে। বর্তমানে জাতিসংঘে আফগানিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করছেন গোলাম ইসাকজাই, তবে তিনি তালেবান পূর্ববর্তী আফগান সরকারের সময়ে নিয়োগ পেয়েছিলেন।

অন্যদিকে, মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন জান্তা জাতিসংঘের নতুন দূত হিসেবে মনোনীত করেছে সাবেক সামরিক কর্মকর্তা অং থুরেইনকে। বর্তমানে সেখানে মিয়ানমারের প্রতিনিধিত্ব করছেন কিয়াও মোয়ে তুন, যিনি নিয়োগ পেয়েছিলেন সাবেক সু চি সরকারের আমলে।

জাতিসংঘের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, আফগানিস্তান ও মিয়ানমার- এই দু’ই দেশের ক্ষমতাসীন সরকার কোনো নির্বাচিত সরকার নয়। তাদের ক্ষমতায় আসীন হওয়ার প্রেক্ষাপটে গণতন্ত্রের লেশমাত্র উপস্থিতি নেই।

জাতিসংঘ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক জোট বারবার মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা ও দেশটির গৃহবন্দি নেত্রী অং সান সুচিকে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। অন্যদিকে, আফগানিস্তানের উদ্দেশ্যে আহ্বান জানানো হয়েছে, সেখানের নারী অধিকার পরিস্থিতির উন্নতি ও দেশটিতে একটি সত্যিকার অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠন করার, যে সরকারে আফগানিস্তানের সব গোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের উপস্থিতি থাকবে।

তবে আফগানিস্তান ও মিয়ানমার- কোনো দেশের সরকারই এখন পর্যন্ত জাতিসংঘের আহ্বানে কর্ণপাত করেনি।

এসএমডব্লিউ