বিশ্বজুড়ে মানুষের আয় এবং সম্পদের ক্রমবর্ধমান বৈষম্যবিষয়ক এক সমীক্ষা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে প্যারিস স্কুল অব ইকোনমিকস—এ অবস্থিত ‌ওয়ার্ল্ড ইনইক্যুয়ালিটি ল্যাব। ওয়ার্ল্ড ইনইক্যুয়ালিটি রিপোর্ট ২০২২ শীর্ষক এই প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত এবং চীনসহ বিশ্বের ৩০ দেশের বৈষম্য পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে। তবে এই প্রতিবেদনে ঠাঁই পায়নি বাংলাদেশ।

ওয়ার্ল্ড ইনইক্যুয়ালিটি ল্যাবের সহ-পরিচালক ও সমীক্ষা প্রতিবেদনের প্রধান লেখক লুকাস চ্যান্সেল এবং ফরাসি অর্থনীতিবিদ থমাস পিকেটিসহ সমাজবিজ্ঞানীদের একটি নেটওয়ার্ক ওই প্রতিবেদন তৈরি করেছেন।

এতে বলা হয়েছে, ১৯৮০’র দশক থেকে বিশ্বের প্রায় সর্বত্রই আয় এবং সম্পদের বৈষম্য বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ধারাবাহিক নিয়ন্ত্রণহীনতা এবং উদার কর্মসূচির কারণে এই বৈষম্য আরও প্রকোট হয়েছে।

ভারতের শীর্ষ ১ শতাংশ মানুষের হাতে দেশের মোট সম্পদের ২২ শতাংশের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। এছাড়া দেশটির ১০ শতাংশ মানুষের হাতে রয়েছে ৫৭ শতাংশ সম্পদ। অন্যদিকে, কানাডার শীর্ষ ১০ শতাংশ মানুষের উপার্জন নিচুতলার ৫০ শতাংশ মানুষের তুলনায় ১৩ গুণ বেশি।

বিশ্ব বৈষম্য প্রতিবেদনে ঠাঁই না পেলেও পুরোপুরি বিপদমুক্ত নয় বাংলাদেশও। চলতি বছরের জাতিসংঘের বিশ্ব মানব উন্নয়ন সূচকে ১৮৯টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১৩৩তম অবস্থানে রয়েছে। সেই সূচকে বলা হয়েছে, নিচের ৪০ শতাংশ জনগোষ্ঠীর হাতে মোট সম্পদের মাত্র ২১ শতাংশ রয়েছে। অন্যদিকে, সবচেয়ে ধনী ১০ শতাংশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ২৭ শতাংশ সম্পদ। 

ওয়ার্ল্ড ইনইক্যুয়ালিটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, চলতি বছর কোভিড সঙ্কটে বিশ্বজুড়েই কোটিপতিদের সম্পদের পরিমাণ আরও বেড়েছে। বিশ্বের মাত্র ২ হাজার ৭৫০ জন অতিধনীর হাতে এখন পৃথিবীর ৩ দশমিক ৫ শতাংশ সম্পদ রয়েছে। ১৯৯৫ সালে তাদের হাতে বিশ্বের ১ শতাংশ সম্পদ ছিল। মহামারির সময়ে ধনীরা আরও ফুলেফেঁপে ওঠায় নিচের সারির অর্ধেক মানুষের কাছে ধনীদের তুলনায় মাত্র ২ শতাংশ সম্পদ রয়েছে।

লুকাস চ্যান্সেল বলেছেন, বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে অতিধনী এবং বাকি জনগোষ্ঠীর মাঝে সম্পদের বৈষম্য বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেছেন, ধনী দেশগুলোতে সরকারের হস্তক্ষেপের কারণে দারিদ্রের ভয়াবহ উত্থান প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু সেই চিত্র বিশ্বের দারিদ্র দেশগুলোর ক্ষেত্রে দেখা যায়নি। দারিদ্রের বিরুদ্ধে সামাজিক অবস্থার গুরুত্ব তুলে ধরছে এই চিত্র।

এসএস