গত আগস্টের মাঝামাঝি সময় তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর দেশটির রাজধানী কাবুলের একটি এলাকায় ড্রোন হামলা চালায় মার্কিন সেনারা। রক্তক্ষয়ী ওই হামলায় ১০ বেসামরিক আফগান নিহত হয়েছিলেন, যাদের ৭ জনই শিশু। এই হামলা ও প্রাণহানি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হলেও দায়ী সেনাদের শাস্তির আওতায় আনা হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

স্থানীয় সময় সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগন এই ঘোষণা দেয় বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর সদস্যদের হত্যা করতেই প্রাণঘাতী ওই হামলা চালানো হয়েছিল বলে প্রাথমিকভাবে দাবি করেছিল ওয়াশিংটন। পরে অবশ্য হামলায় নিহতরা সাধারণ মানুষ বলে স্বীকার করে বাইডেন প্রশাসন।

রয়টার্স বলছে, জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের সদস্যরা লুকিয়ে আছে, এমন অভিযোগে গত ২৯ আগস্ট কাবুলের একটি আবাসিক এলাকায় ড্রোন হামলা চালায় মার্কিন সামরিক বাহিনী। হামলায় ১০ জন নিহত হন এবং তাদের মধ্যে ৭ জনই শিশু। নিহতদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ শিশুর নাম সুমাইয়া, তার বয়স ছিল মাত্র ২ বছর।

অবশ্য হামলার পরপরই নিজেদের ভুল স্বীকার করে মার্কিন সামরিক বাহিনী জানায়, তাদের হামলায় বেসামরিক মানুষের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। নিরপরাধ মানুষের প্রাণহানির ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে ব্যথিত বলেও সেসময় দাবি করা হয়।

এরপর সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝিতে এক বিবৃতিতে মার্কিন সেনাবাহিনীর মেরিন শাখার শীর্ষ নির্বাহী জেনারেল ফ্র্যাঙ্ক ম্যাকেঞ্জি এই ঘটনাকে ‘দুঃখজনক ভুল’ উল্লেখ করে বলেন, ‘আমাদের তদন্ত থেকে জানা গেছে, কাবুলে ওই হামলা ছিল একটি দুঃখজনক ভুল।’

সোমবার পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি সাংবাদিকদের বলেন, গত আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে কাবুলে চালানো রক্তক্ষয়ী ড্রোন হামলার বিষয়ে মার্কিন সামরিক বাহিনীর জ্যেষ্ঠ কমান্ডাররা প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের কাছে বেশ কয়েকটি সুপারিশ করেছেন। তবে এর মধ্যে কোনোটিই নির্দিষ্ট কারও বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক নয়।

সামরিক বাহিনীর জ্যেষ্ঠ কমান্ডারদের এই সুপারিশ লয়েড অস্টিন গ্রহণ করেছেন বলেও জানান জন কিরবি। তিনি জানান, ‘আমি মনে করি না যে, কাবুলের সেই ড্রোন হামলার ঘটনায় কাউকে ব্যক্তিগতভাবে জবাবদিহিতার আওতায় আনার মতো কোনো ইস্যু আছে।’

টিএম