হোয়াইট হাউস ছেড়ে আসার পর ফ্লোরিডার পাম বিচ শহরের মার-আ-লাগো ভবনে থাকা নিয়ে জটিলতায় পড়তে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিজের কেনা ওই ভবনে তার বসবাস করার আইনগত বৈধতা রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন শহরের পৌরপ্রধান ক্রিক বোলিন।

পরবর্তী টাউন কাউন্সিল বৈঠকে এ বিষয়টি উত্থাপন করা হবে বলেও মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে এক মেইলবার্তায় বলেছেন পাম বিচ পৌর প্রধান।

তবে নিজের সংগঠন ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের মাধ্যমে ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, মার-আ-লাগোতে তার বসবাসের ক্ষেত্রে আইনগত কোনো বাধা নেই- এ বিষয়ে তিনি ‘নিশ্চিত’।  

১৯২৭ সালে ফ্লোরিডার বিখ্যাত পোস্ট পরিবারের উত্তরসূরী মারজোরি মেরিওয়েদার পোস্ট ২০ একর জমির ওপর রাজসিক এই স্থাপনা তৈরি করিয়েছিলেন। ১৯৮৫ সালে ১ কোটি ডলারের বিনিময়ে এই ভবনটি কিনে নেন ট্রাম্প এবং কিছু মেরামতের কাজ শেষে ১৯৯৩ সালে একে ক্লাবে রূপান্তরিত করেন।

নিউইয়র্ক পোস্টসহ একাধিক মার্কিন সংবাদমাধ্যম এই তথ্য জানিয়ে বলেছে, সমুদ্র তীর ঘেঁষা এই ভবনটি বরাবরই ট্রাম্পের খুব প্রিয়। ক্ষমতার চার বছর এই ভবনে অনেক সময় কাটিয়েছেন তিনি। প্রতিবছর যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘ শীতকালের প্রায় পুরো সময় এই ভবনে কাটানোর কারণে অনেকেই মার-আ-লাগোকে ‘শীতকালীন হোয়াইট হাউস’ নাম দিয়েছিলেন।

এরপর ২০ জানুয়ারি সাংবিধানিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পর হোয়াইট হাউস ছেড়ে এসে ফ্লোরিডার পাম বিচের মার-আ-লাগো ভবনে সপরিবারে থাকতে শুরু করেন তিনি।

কিন্তু গোল বাধে অন্যখানে। ট্রাম্প সেখানে পাকাপাকিভাবে বসবাস শুরু করার আগে শহরের উচ্চবিত্ত মানুষদের অবকাশ যাপন ও চিত্ত বিনোদনের জন্য ক্লাব হিসেবে ব্যবহার হতো ভবনটি। বর্তমানে সেই ক্লাবের সদস্যসংখ্যা ৫০০। হোয়াইট হাউস ছেড়ে মার-আ-লাগোতে ওঠার আগে ক্লাবের সদস্যদের সঙ্গে কোনো আইনী বোঝাপড়া বা চুক্তিতে আসেননি তিনি ।

ফলে ক্লাব ব্যবহার করতে গিয়ে সমস্যায় পড়া সদস্যরা অভিযোগ জানায় নগর কর্তৃপক্ষ বরাবর। তাদের অভিযোগ আমলে নিয়েই এ বিষয়ে আইনী পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে নগর কর্তৃপক্ষ ভাবছে বলে জানান ক্রিক বোলিফ।

মেইলবার্তায় ক্রিক বোলিফ বলেন, ‘আমাদের নগর কর্তৃপক্ষের আইনজীবী জন স্কিপ র‌্যান্ডলফ বিষয়টি দেখছেন। ক্লাব মেম্বারদের সঙ্গে ভবন মালিকের যে চুক্তি হয়েছিল, তা যথাযথভাবে খতিয়ে দেখার পরই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

তবে এ সম্পর্কে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সংগঠন ট্রাম্প অর্গানাইজেশন মেইলবার্তায় সিএনএনকে বলেছে, ‘ক্লাব সদস্যদের সঙ্গে যে চুক্তি হয়েছিল, তাতে এমন কোনো ধারা বা শর্ত নেই যা যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্টকে ওই ভবনে বসবাস করা থেকে বিরত রাখতে পারে।’

ফ্লোরিডা রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম ভবন হিসেবে স্বীকৃত মার-আ-লাগোতে  ১২৮ টি কক্ষ ছাড়াও রয়েছে ২০ হাজার বর্গফুটের একটি নাচঘর, ৫ টি টেনিস কোর্ট এবং সুবৃহৎ একটি সুইমিং পুল। আর একটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো- ভবনটি থেকে সরাসরি আটলান্টিক মহাসাগরের সৌন্দর্য্য উপভোগ করা যায়।

১৯৮৫ সালে পুরনো এ স্থাপনাটি কেনার পর তাতে ব্যাপক সংস্কার করেন ট্রাম্প। ফ্লোরিডার যে এলাকায় মার-আ- লাগোর অবস্থান, সেই হিসেবে বর্তমানে ভবনটির আর্থিক মূল্য প্রায় ১৬ কোটি ডলার বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ম্যাগাজিন ফোর্বস।

সূত্র: সিএনএন

এসএমডব্লিউ