প্রচলিত সামাজিক রীতির বাইরে যাওয়া সহজ কাজ নয়। স্রোতের বিপরীতে যারা চলতে পারেন বহু মানুষের বহু কথা শুনেই তাদের চলতে হয়। এই স্রোতের বিপরীতে চলাদেরই একজন মার্ক ব্রায়ান। পুরুষ হলেও ব্রায়ান অবলীলায় পরে ফেলেন মেয়েদের পোশাক। কারণ তিনি মনে করেন, পোশাকের কোনো নারী-পুরুষ হয় না। 

মেয়েদের পোশাকগুলোর মধ্যে হাই-হিল জুতো, টাইট স্কার্ট ও টাই  সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে ব্রায়ানের। তিনি মনে করেন পুরুষদের এগুলো পরার মধ্যে অস্বাভাবিক কিছু নেই। হাইহিল জুতাগুলোকে তিনি মনে করেন এগুলো খুবই স্টাইলিশ, এতে পায়ের সৌন্দর্য বাড়ে। 
 
মার্কিন নাগরিক ৬১ বছর বয়সী ব্রায়ান আসলে বিশ্বাস করেন পোশাকের কোনো নারী-পুরুষ হয় না। এই বিশ্বাসই তার অন্য রকম এক চাহিদা তৈরি করেছে; যার জন্য নিয়মিতই তার ডাক পড়ছে শুটিংয়ের জন্য। 

ব্রায়ান সম্প্রতি ডেনমার্কের এক নারী বিষয়ক পত্রিকার মডেল হয়েছেন।  তাকে এখন বহু মানুষে চেনেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার বহু ফলোয়ার রয়েছে। তবে গেল বছরের শুরুর দিকে যখন তিনি প্রথম প্রথম নিজের ছবি পোস্ট করা শুরু করেছিলেন তখন তাকে কেউ চিনতো না।  

ব্রায়ানের তিন সন্তান রয়েছে। স্ত্রী ও সন্তানদেন নিয়ে জার্মানির ছোট একটি শহরে থাকেন। বছর পাঁচেক আগে থেকে ব্রায়ান মূলত নারীদের পোশাকগুলো পরতে শুরু করেন। তবে তারও আগে থেকে যখন তিনি কলেজে পড়তেন হাইহিল জুতা তাকে টানতো। 

ব্রায়ান নিজে তার এই পোশাক পরার বিষয়টি ‘হাইব্রিড স্টাইল’ বলে আখ্যা দেন। তিনি বলেন, আমি নারী হিসেবে বিবেচিত হওয়ার চেষ্টা করছি না। পুরুষ হিসেবেই আমি শুধু পছন্দের পোশাক পরতে চেয়েছিলাম। আমি পুরুষালি ও মেয়েলি স্টাইলের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটাই। 

ব্রায়ান যে কাজটা করছেন তা মোটেই সহজ নয়। পেশায় তিনি মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ার। প্রতিদিন তিনি যখন ট্রেনে করে অফিসে যান মানুষের কৌতূহলী দৃষ্টি তার সঙ্গে লেপ্টে থাকে, সঙ্গে থাকে তীর্যক মন্তব্য। তবে এসবে মোটেও পাত্তা দেন না ব্রায়ান। 

তিনি বলেন, আমার আত্মবিশ্বাসের কারণেই হয়তো মানুষ আমাকে বিরক্ত করে না। আমি মনে করি, কেউ যখন দুর্বলতা প্রকাশ করে মানুষ তখন তাকে আক্রমণ করে। আর সে জন্যই আমি দুর্বলতা দেখায় না। 

তার এই কাজের জন্য তিনি আসলে পুরুষ না কি সেটা নিয়ে সন্দেহ করেন কেউ কেউ। মার্কের ভাষায়, তিনি তর্ক করে কারও ভুল ভাঙাতে চান না। 

ডয়েচে ভেলে/এনএফ