বহুল বিবাদপূর্ণ পূর্ব লাদাখের যে প্যাংগং হ্রদের কাছে দেড় বছর আগে তীব্র সংঘর্ষে জড়িয়েছিল ভারত এবং চীন, সেই হ্রদজুড়ে বেইজিং একটি সেতু নির্মাণ করছে। প্যাংগং হ্রদের স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণ করে ভূ-গোয়েন্দা বিশেষজ্ঞ ড্যামিয়েন সিমন এই তথ্য জানিয়েছেন বলে সোমবার খবর দিয়েছে এনডিটিভি।

ভারতীয় এই সংবাদমাধ্যম বলছে, সেতুটি হ্রদের একটি অংশজুড়ে নির্মিত হচ্ছে; যা চীনা ভূখণ্ডের অন্তর্ভুক্ত। এই সেতুটি হ্রদের উভয় তীরকে সংযুক্ত করছে। সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হলে চীন দ্রুত সৈন্য ও ভারী অস্ত্রশস্ত্র সরিয়ে নিতে পারবে। 

সেতুটি ইতোমধ্যে হ্রদের একটি সংকীর্ণ অংশে প্রায় পুরোপুরি নির্মিত হয়েছে বলে সিমনের টুইট করা স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে।

গত বছর ভারতীয় সৈন্যরা প্যাংগং হ্রদের দক্ষিণ তীরের মূল কৈলাশ রেঞ্জের ওপরে চলে যায়। যে কারণে ওই অঞ্চলে চীনা পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) সৈন্যরা পিছু হটে। সেতুটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে ভারতীয় সামরিক বাহিনী সেই সুযোগ পাবে না। এছাড়া বিবাদপূর্ণ সীমান্ত এলাকায় অতিরিক্ত সৈন্য মোতায়েনের একাধিক রাস্তা পাবে চীন।

২০২০ সালের জুনের মাঝের দিকে পূর্ব লাদাখের বিতর্কিত এই সীমান্ত এলাকায় চীন-ভারতের সৈন্যরা মুখোমুখি সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। বেইজিং এবং নয়াদিল্লি দফায় দফায় বৈঠকের মাধ্যমে সৈন্য সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে পর্যন্ত সেখানে চরম উত্তেজনা বিরাজ করে।

সেই সময় পূর্ব লাদাখের ডেপসাং সমভূমির উত্তর এবং সেখান থেকে আরও দক্ষিণের ডেমচক এলাকায় উভয় দেশ ৫০ হাজারের বেশি সৈন্য মোতায়েন রাখে। ওই বছরের জুনে গালওয়ানের নদী এলাকায় দুই দেশের সৈন্যদের সহিংস সংঘাত হয়। এতে ভারতীয় অন্তত ২০ সৈন্যের প্রাণহানি ঘটে।

চীন বলছে, গালওয়ানের ওই সংঘাতে তাদেরও চার সৈন্য নিহত হয়েছে। তবে ভারতের দাবি, গালওয়ানে ৪০ জনের বেশি চীনা সৈন্য হতাহত হয়েছে।

সেই সংঘাতের এক বছরের বেশি সময় পর গত বছরের জুলাইয়ে সংঘর্ষপূর্ণ এলাকার দুই কিলোমিটার থেকে সৈন্য সরিয়ে নিতে রাজি হয় উভয় দেশ। ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল এবং চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইর বৈঠকের পর উভয় দেশের সৈন্য সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত একটি গণমাধ্যমের টুইটার অ্যাকাউন্টে প্যাংগং হ্রদে সেতু নির্মাণের ভিডিও টুইট করা হয়েছে। এতে দেখা যায়, গালওয়ান উপত্যকায় চীনা পতাকা উত্তোলন করা হচ্ছে। তবে পতাকা উত্তোলনের এই ঘটনা বিবাদপূর্ণ গালওয়ানে দুই দেশের অসামরিক অঞ্চল লঙ্ঘন করেনি বলে ভারতীয় সেনাবাহিনীর কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে।

সূত্র: এনডিটিভি, দ্য প্রিন্ট।

এসএস