ছবি: দোহা নিউজ

কাতারে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে তিন সপ্তাহ বয়সী এক শিশু। রোববার এই দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে বলে এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে দেশটির জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয়ের রোববারের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘কোভিডে আক্রান্ত হয়ে আজ দোহায় তিন সপ্তাহ বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। কোভিড ছাড়া ওই শিশুর আর কোনো শারীরিক অসুস্থতা ছিল না।’

দেশবাসীকে করোনা সংক্রমণের বিষয়ে সচেতন থাকা ও স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে আরও একবার প্রমাণিত হলো- যে কোনো বয়সী মানুষই কোভিডে আক্রান্ত হতে পারেন এবং এই রোগ গুরুতর অসুস্থতা থেকে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে পারে।’

মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় অঞ্চলের ছোট দেশ কাতারের মোট জনসংখ্যা ২৮ লাখ ৭ হাজার ৮০৫ জন। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত কাতারে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৩ লাখ ৩ হাজার ২৪০ জন এবং এই রোগে মৃত্যু হয়েছে মোট ৬২৭ জনের।

কাতারের জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা দেশটির সংবাদমাধ্যম দ্য পেনিনসুলাকে জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসের সবচেয়ে সংক্রামক ধরন হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া ওমিক্রনের প্রভাবে বর্তমানে সংক্রমণের ঢেউ চলছে কাতারে এবং এতে অতীতের তুলনায় অনেক বেশিসংখ্যক ‍শিশু বর্তমানে আক্রান্ত হচ্ছে করোনায়।

ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বব্যাপী যে ৩৫ লাখ লোকের মৃত্যু হয়েছে তার মধ্যে মাত্র ০.৪ শতাংশের বয়স ২০ বছরের কম। কমবয়সী মৃতদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশির বয়স ৯ বা তার চেয়ে কম।

যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারিরর প্রথমার্ধ পর্যন্ত দেশটিতে ৪ বা তারও কম বয়সী ২৫৯টি শিশুর মৃত্যু কোভিডের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল।

কিন্তু গত বছরের শেষ দিকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ওমক্রিন ছড়িয়ে পড়ার পর শিশুদের করোনায় আক্রান্তক হওয়ার হার মহামারির আগের দুই বছরের তুলনায় অনেক বেড়েছে।

সেই সঙ্গে বাড়ছে গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া শিশুর সংখ্যাও। বৈজ্ঞানিক গবেষণায় ইতোমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে যে- ওমিক্রন তার পূর্বসূরী বা সার্স-কোভ-২ বা মূল করোনাভাইরাসের চেয়ে ৭০ গুণ বেশি সংক্রামক ও টিকার সুরক্ষাকে ফাঁকি দিতে সক্ষম।

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা দেশটির জাতীয় দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমসকে এ সম্পর্কে বলেন, ‘বয়স্কদের ক্ষেত্রে ওমক্রিন প্রাণঘাতী ভাইরাস না হলেও শিশুদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটি কিছুটা ভিন্ন। তাদের ক্ষেত্রে এই ভাইরাসটি অতটা মৃদু নয়।’

এসএমডব্লিউ