বড় জাতের এক ধরনের ইঁদুর থেকে ছড়িয়ে পড়ছে করোনাভাইরাস। এই পরিস্থিতিতে সংক্রমণ রুখতে ২ হাজার ইঁদুর মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হংকংয়ের প্রশাসন। তাদের অভিযোগ, বিভিন্ন পশুপাখির দোকান থেকে ওই প্রাণির মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে। আর তাই তাদের মেরে ফেলা হবে।

বুধবার (১৯ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও ডয়চে ভেলে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা ছড়ানোর অভিযোগ আনা ইঁদুরগুলো আকৃতিতে একটু বড়, নাম হ্যামস্টার। ছোট্ট এই প্রাণির মাধ্যমেই হংকংয়ে করোনা ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ উঠার পর প্রায় দুই হাজার হ্যামস্টার মারার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। যদিও পশুপ্রেমী একাধিক সংগঠন এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে।

ঘটনার সূত্রপাত একটি পশু বিক্রির দোকান থেকে। সম্প্রতি সেই দোকানের মালিক এবং সেখান থেকে হ্যামস্টার কেনা একাধিক ক্রেতা করোনায় আক্রান্ত হন। উৎস খুঁজতে গিয়ে দেখা যায়, ওই দোকানের একাধিক হ্যামস্টার ইঁদুর করোনায় আক্রান্ত।

হংকং প্রশাসন বলছে, একাধিক হ্যামস্টার ইঁদুরের শরীরে করোনা শনাক্ত হওয়ায় এটি স্পষ্ট হয়েছে যে, এই প্রাণিগুলো থেকেই মানুষের মধ্যে করোনার সংক্রমণ ঘটছে। এরপরই ওই দোকানের সকল ক্রেতাকে সতর্ক করে দেওয়া হয়। একইসঙ্গে গত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ওই দোকান থেকে কেনা সকল হ্যামস্টার প্রশাসনের কাছে ফেরত দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়।

এছাড়া হ্যামস্টারদের মুখ দিয়ে আদর না করতে এবং এই প্রাণির সকল ক্রেতাকে আইসোলেশনে থাকতেও নির্দেশ দেয় প্রশাসন। এমনকি অন্য দোকান থেকেও যারা হ্যামস্টার কিনেছেন, তাদের ক্ষেত্রেও একই নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে।

এরপরই করোনার সংক্রমণ রুখতে দুই হাজার হ্যামস্টারকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। তবে তাদের দাবি, হ্যামস্টারগুলোকে মানবিক প্রক্রিয়ায় মেরে ফেলা হবে। যাতে কষ্ট কম হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) গবেষকরা অবশ্য বলছেন, প্রাণির মাধ্যমে মানুষের শরীরে করোনার সংক্রমণ ঘটছে, এমন তথ্য এখনও তাদের হাতে আসেনি। আর তাই হংকংয়ের দাবির বৈজ্ঞানিক সত্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

এই কারণে পশুপ্রেমী সংগঠনগুলোর দাবি, বৈজ্ঞানিক প্রমাণ ছাড়া কেন এতোগুলো প্রাণিকে হত্যা করা হবে? এছাড়া মানুষ করোনায় আক্রান্ত হলে তাদের চিকিৎসা হলেও কোভিডে আক্রান্ত প্রাণিদের মেরে ফেলার অধিকার নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে এসব সংগঠন।

সূত্র : ডয়চে ভেলে

টিএম