দেশজুড়ে একাধিক সেনা শিবিরে প্রচণ্ড গোলাগুলির পর বুরকিনা ফাসোর প্রেসিডেন্ট রোচ মার্ক ক্যাবোরকে আটক করেছে বিদ্রোহী সৈন্যরা। রাজধানী ওয়াগাদৌগৌতে প্রেসিডেন্টের বাসভবনের আশপাশে রোববার রাতে ভারী গোলাগুলির পর একটি সেনা শিবিরে বিদ্রোহী সৈন্যরা তাকে আটকে রেখেছে। দেশটির দু’টি নিরাপত্তা সূত্র এবং পশ্চিমা একজন কূটনীতিক বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে এই তথ্য জানিয়েছেন।

এর আগে, রোববার দেশটির কয়েকটি সেনা শিবিরে ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনা ঘটলেও সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করেছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে তথ্য ছড়িয়ে পড়ে, তা অস্বীকার করে বুরকিনার সরকার।

রয়টার্স বলছে, সোমবার সকালের দিকে রোচ মার্কের বাসভবনের কাছে প্রেসিডেন্টের বহরের বেশ কয়েকটি সাঁজোয়া যান দেখা গেছে। এর মধ্যে একটি গাড়িতে রক্ত ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল। প্রেসিডেন্টের বাসভবনের আশপাশের বাসিন্দারা বলেছেন, তারা রাতভর ভারী গোলাগুলির শব্দ শুনেছেন।

যদিও কয়েকটি সেনা শিবিরে কয়েক ঘণ্টা ধরে গোলাগুলির ঘটনার পর সামরিক অভ্যুত্থান ঘটতে চলেছে বলে রোববার যে গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল, তা অস্বীকার করে দেশটির সরকার। বিদ্রোহী সৈন্যরা ইসলামি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য আরও সহায়তার দাবি জানিয়েছেন।

তবে সোমবার তাৎক্ষণিকভাবে বুরকিনা ফাসোর সরকারের মন্তব্য জানা যায়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স। জঙ্গিদের হাতে বারবার বেসামরিক নাগরিক এবং সেনাসদস্যদের প্রাণহানির ঘটনা ঘিরে গত কয়েক মাসে পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশটিতে ক্ষোভ বাড়ছে। স্থানীয় এই জঙ্গিদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) এবং আল-কায়েদার সংশ্লিষ্টতা আছে।

রোববার রাস্তায় নেমে বিদ্রোহী সৈন্যদের প্রতি সমর্থন জানান দেশটির শত শত মানুষ। এ সময় তারা প্রেসিডেন্ট রোচ মার্ক ক্যাবোরের রাজনৈতিক দলের সদরদফতরে লুটপাট চালান। পরে বুরকিনা ফাসোর সরকার রোববার রাত ৮টা থেকে পরবর্তী দু’দিনের জন্য দেশজুড়ে কারফিউ জারি করেছে। একই সঙ্গে দেশটির সব স্কুলও দু’দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

গত দেড় বছরের বেশি সময় ধরে মালি ও গিনিতে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সফল অভিযানের পর পশ্চিম এবং মধ্য-আফ্রিকার দেশগুলোর সরকার সামরিক অভ্যুত্থানের আশঙ্কা করছিল। গত বছর চাদের প্রেসিডেন্ট ইদ্রিস দেবি যুদ্ধক্ষেত্রে মারা যাওয়ার পর দেশটির ক্ষমতা দখলে নেয় সেনাবাহিনী।

সূত্র: রয়টার্স।

এসএস