রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তে সেনা মোতায়েনের পর থেকে দুই দেশের মধ্যে শুরু হওয়া উত্তেজনা নিরসনে বৈঠকে বসেছেন রুশ ও ইউক্রেনের কূটনীতিকরা। বুধবার ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে শুরু হয়েছে এই বৈঠক।

বৈঠকে ফ্রান্স ও জার্মানির কয়েকজন কূটনীতিকও উপস্থিত আছেন বলে বুধবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মূলত জার্মানি ও ফ্রান্সের জ্যেষ্ঠ কূটনীতিকদের প্রচেষ্টাতেই এই দুরূহ কাজটি সম্ভব হয়েছে। এর আগে ২০১৫ সালেও একবার বৈঠক হয়েছিল এই চার দেশের প্রতিনিধিদের। সেই বৈঠকের আগের বছর, ২০১৪ সালে ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রিমিয়ার দখল নিয়েছিল রাশিয়া।

রাশিয়ার সঙ্গে তার প্রতিবেশী দেশ ইউক্রেনের সাম্প্রতিক উত্তেজনা শুরু হয়েছে পাশ্চাত্য দেশগুলোর সামরিক জোট নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশনকে (ন্যাটো) ঘিরে। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের ঘনিষ্ট মিত্র ইউক্রেন ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন করার পর থেকেই দিন দিন তিক্ত হচ্ছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক।

রাশিয়ার একমাত্র সামুদ্রিক জলপথ কৃষ্ণসাগর। এই সাগরের উপকূলবর্তী অপর দেশ ইউক্রেন যদি ন্যাটোর সদস্য হয়, সেক্ষেত্রে কৃষ্ণসাগর অঞ্চলে ন্যাটোর তৎপরতা স্বাভাবিকভাবেই বাড়বে এবং এটি কখনই রাশিয়ার কাম্য নয়। বিশ্বের বৃহত্তম এই দেশ ঐতিহাসিকভাবেই পাশ্চাত্য শক্তিসমূহের আধিপত্যবিরোধী।

রাশিয়া চায়, ইউক্রেন যেন ন্যাটোর সদস্যপদ লাভের আবেদন প্রত্যাহার করে নেয়। এ জন্য প্রথমে দেশটির ক্ষমতাসীন সরকারকে চাপ দিয়েছে রাশিয়া। কিন্তু তাতে কাজ না হওয়ায় ইউক্রেন-রাশিয়া সীমান্তে গত মাসে ১ লাখেরও বেশি সেনা সদস্য মোতায়েন করে দেশটি।

যদিও চলতি মাসে তাদের অধিকাংশ সৈন্য ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে এখনও সীমান্তে অবস্থান করছে ১০ হাজারেরও বেশি রুশ সেনা।

মস্কো বলেছে, ইউক্রেনে আগ্রাসন চালানোর কোনও পরিকল্পনা নেই রাশিয়ার; বরং রাশিয়া চাইছে তার জলপথ যেন নিরাপদ থাকে; কিন্তু তাতে একদমই আস্থা রাখাতে পারছে না যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ। কারণ, ২০১৪ সালে ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রিমিয়া দ্বীপ ছিনিয়ে নেওয়ার স্মৃতি এখনও উজ্জ্বল হয়ে আছে পাশ্চাত্য নেতাদের সামনে।

এর মধ্যেই মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক সংবাদ সম্মেলনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের প্রতি সতর্কবার্তা দিয়ে বলেছেন- মস্কো যদি ইউক্রেনে হামলার কোনো প্রকার পদক্ষেপ নেয়, সেক্ষেত্রে তার পরিণতি হবে ভয়াবহ; পাশাপাশি, পুতিনের ওপরও জারি করা হবে নিষেধাজ্ঞা।

এসএমডব্লিউ