করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর পর লকডাউনের কারণে মানুষের জীবনযাপন অনেকটাই অনলাইননির্ভর হয়ে পড়েছে। অনলাইন স্কুল থেকে শুরু করে বিয়েসহ অন্যান্য সামাজিক অনুষ্ঠানও আয়োজন করা হচ্ছে অনলাইনে। এছাড়া করোনা সংক্রমণ কমাতে বিভিন্ন দেশে বেড়েছে ক্যাশলেস ট্রানজাকশন বা অনলাইনে লেনদেনের প্রবণতা।

কিন্তু অনলাইনের মাধ্যমে কেউ কী কখনও ভিক্ষাবৃত্তি করেছে? নাকি কাউকে কখনও করতে দেখা গেছে! গল্প মনে হলেও এমনটিই ঘটেছে বাস্তবে। ভারতের বিহার রাজ্যের এক ভিক্ষুক নজির গড়েছেন অনলাইনে ভিক্ষা নেওয়ার। বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম মানি কন্ট্রোল এবং ইন্ডিয়া.কম।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৪০ বছর বয়সী রাজু প্যাটেল বিহারের বাসিন্দা। পেশায় ভিক্ষুক মধ্যবয়সী এই ব্যক্তি রাজ্যটির বেত্তিয়াহ রেল স্টেশনে ভিক্ষা করেন। তার গলায় ঝোলানো প্ল্যাকার্ডে লেখা কিউআর (QR) কোড এবং ফোন নম্বর। হাতে রয়েছে ট্যাব। ভিক্ষা করার সময়ে টাকা অনলাইনে অর্থাৎ তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে দেওয়ার জন্য সবাইকে আবেদন জানান তিনি।

ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআই’কে রাজু জানিয়েছেন, ‘ছোটবেলা থেকে ভিক্ষা করি। এভাবেই দিন চলে। অনেকেই এখন নগদ টাকা নিয়ে যাতায়াতে স্বচ্ছন্দ নন। তাই আমিও আপডেট করেছি নিজেকে। এখন ডিজিটাল মাধ্যমেও ভিক্ষার টাকা নিই।’

‘অনেকেই বলেন ডিজিটাল দুনিয়ায় নগদ টাকা নিয়ে যাতায়াতে সমস্যা হয়। তাই এভাবে টাকা নিলে অনেক সময়ে সুবিধা হয়। সব দিক বিচেনা করে তাই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আর ই-ওয়ালেট খুলেছিলাম।’

রাজু প্যাটেল আরও জানিয়েছেন, ‘জীবনধারণের জন্য আর কোনো কাজ পাইনি আমি। তাই ভিক্ষাই আমার পেশা। ভিক্ষা করে যেটুকু রোজগার হয়, তাতে আমার দিন চলে যায়। খাওয়া-দাওয়া করে স্টেশনেই ঘুমাই।’

ডিজিটাল এই ভিক্ষুক জানিয়েছেন, ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খোলার সময়ে তার কাছ থেকে প্যান ও আধার নম্বর চাওয়া হয়েছিল। সেই সময়ে তিনি নিজের প্যান কার্ড তৈরি করান। বর্তমানে বেত্তিয়াহের স্টেট ব্যাংকের প্রধান শাখায় অ্যাকাউন্ট রয়েছে তার নামে। ডিজিটাল মাধ্যমে ভিক্ষা হিসেবে পাওয়া অর্থ সেখানে জমা পড়ে।

টিএম