যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে শিগগিরই ইউক্রেন সফর করার আহ্বান জানিয়েছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। রোববার (১৩ ফেব্রুয়ারি) মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনালাপে এই আমন্ত্রণ জানান তিনি। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের দফতরের বরাত দিয়ে সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

ইউক্রেন সীমান্তে দীর্ঘদিন ধরেই প্রায় এক লাখ সেনাসদস্য মোতায়েন করে রেখেছে প্রতিবেশী দেশ রাশিয়া। এর মধ্যে ট্যাংক ও কামানসহ যুদ্ধবিমানের বহরও ইউক্রেন সীমান্তে পাঠিয়েছে দেশটি। যেকোনো মুহূর্তে রুশ সেনারা দেশটিতে আক্রমণ করতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে। যদিও ইউক্রেনে হামলার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে বরাবরই দাবি করে আসছে মস্কো।

তবে যুক্তরাষ্ট্র বলছে, যেকোনো মুহূর্তে ইউক্রেনে হামলা করে বসতে পারে রাশিয়া। হামলার আশঙ্কায় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মার্কিন নাগরিকদের ইউক্রেন ছাড়ারও নির্দেশ দিয়েছে ওয়াশিংটন। এই পরিস্থিতিতে রোববার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ফোনে কথা বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

ফোনালাপের পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের দফতর থেকে জানানো হয়, ভলোদিমির জেলেনস্কি টেলিফোনে জো বাইডেনকে বলেছেন, ‘সামনে দিনে কিয়েভে আপনার সফর এই অঞ্চলের উত্তপ্ত পরিস্থিতি স্থিতিশীল করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। (প্রতিপক্ষের জন্য এটি) একটি শক্তিশালী সংকেত হবে এবং তা উত্তেজনা হ্রাসে অবদান রাখবে।’

অবশ্য ইউক্রেন সফরের বিষয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির আমন্ত্রণ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। তবে ইউক্রেনের অজ্ঞাত এক কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, ইউক্রেন সফরের বিষয়ে জেলেনস্কি আমন্ত্রণ জানালেও ফোনালাপে সে বিষয়ে কোনো ইতিবাচক সাড়া দেননি জো বাইডেন।

এদিকে রাশিয়ার সম্ভাব্য হামলা নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর মূল্যায়ন নিয়েও ফোনালাপে হতাশা প্রকাশ করেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেছেন, এই ধরনের হুঁশিয়ারি ইউক্রেনের অর্থনীতির ক্ষতি করছে এবং দেশের মুদ্রা ব্যবস্থাপনাও চাপে পড়ছে।

এর আগে শনিবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপে ইউক্রেনে হামলা করলে রাশিয়াকে চড়া মূল্য দিতে হবে বলে সতর্ক করে দেন জো বাইডেন। তিনি বলেন, ইউক্রেনে হামলার মতো কোনো পদক্ষেপ নিলে মস্কোকে ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হবে এবং (সারা বিশ্ব) থেকে বিচ্ছিন্ন করা হবে।

দীর্ঘ এক ঘণ্টার এই ফোনালাপে চলমান ইউক্রেন সংকট সমাধানের পথে কোনো অগ্রগতি হয়েছে বলে দাবি করেনি কোনো পক্ষই। বাইডেন প্রশাসনের শীর্ষ এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, উভয় প্রেসিডেন্টের মধ্যে এই ফোনালাপ ছিল পেশাদার এবং বাস্তবসম্মত। কিন্তু এর মাধ্যমে কোনো মৌলিক পরিবর্তন আসেনি।

তবে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সরকারি বাসভবন ক্রেমলিন জানিয়েছে, ফোনালাপে বাইডেনকে প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছেন- রাশিয়ার দাবি ও উদ্বেগগুলো বিবেচনায় নিতে ব্যর্থ হয়েছে ওয়াশিংটন এবং পূর্ব ইউরোপে সামরিক জোট ন্যাটোর সম্প্রসারণ এবং ইউক্রেনে সেনা মোতায়েনের মতো বিষয়গুলোসহ প্রধান প্রধান নিরাপত্তা ইস্যুগুলোতে ‘যথেষ্ট উত্তর’ পায়নি মস্কো।

টিএম