ইউক্রেনে চলমান হামলার মধ্যেই আজভ সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে রাশিয়া। রাশিয়ার সামুদ্রিক ও নৌ-চলাচল বিষয়ক রাষ্ট্রীয় সংস্থার বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) এই তথ্য জানিয়েছে রুশ বার্তাসংস্থা ইন্টারফ্যাক্স।

অন্যদিকে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত আজভ সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে রাশিয়া। এই সাগরে রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয় দেশেরই বন্দর রয়েছে এবং ইউক্রেনের বৃহৎ বন্দর ম্যারিউপল আজভ সাগরেই অবস্থিত। অবশ্য কের্চ প্রণালীর মাধ্যমে এই সাগরটি নিয়ন্ত্রণ করছে মস্কো।

বিশ্বে সবচেয়ে বেশি গম রপ্তানি করে থাকে রাশিয়া। তবে দেশটি প্রধানত কৃষ্ণ সাগরের বন্দরগুলো থেকেই সেসব শস্য শিপিং করে থাকে। অন্যদিকে আজভ সাগরের বন্দরগুলো মূলত ধারণক্ষমতায় ছোট এবং অগভীর।

এদিকে আজভ সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচলের বিষয়ে রাশিয়ার সিদ্ধান্তের পর সেখানে জাহাজ চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে শস্য শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে, ‘(আজভ সাগরে) সব জাহাজ চলাচলই বন্ধ।’

এর আগে চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে রাশিয়ার বিরুদ্ধে সমুদ্র অবরোধ এবং সাগরে প্রবেশে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলেছিল ইউক্রেন। সেসময় ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবা জানিয়েছিলেন, আজভ সাগর থেকে ইউক্রেনকে সম্পূর্ণরূপে অবরুদ্ধ এবং কৃষ্ণ সাগরেও প্রায় পুরোপুরি ভাবে দেশটিকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে রুশ সামরিক বাহিনী।

তবে বেলারুশের সঙ্গে নৌ মহড়া চালানোর জন্য সেসময় আজভ সাগরে বিধিনিষেধ আরোপের কথা জানিয়েছিল রাশিয়া।

ইউক্রেনে বেশ জোরেশোরেই হামলা শুরু করেছে রাশিয়া। হামলা হয়েছে রাজধানী কিয়েভে অবস্থিত ইউক্রেনের সামরিক সদর দপ্তরেও। এই পরিস্থিতিতে কিয়েভ ছেড়ে পালাতে শুরু করেছেন বহু মানুষ। এছাড়া কিয়েভের সামরিক সদর দপ্তরের পাশাপাশি হামলা হয়েছে দেশটির সামরিক বাহিনীর মিসাইল কমান্ড সেন্টারগুলোতেও।

হামলার মুখে রাজধানী কিয়েভে জরুরি সাইরেন বাজায় কর্তৃপক্ষ। পরে আতঙ্কে শহর ছেড়ে পালাতে শুরু করেন বহু মানুষ। অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া বেশ কিছু ছবিতে মহাসড়কে পলায়নরত মানুষের গাড়ির স্রোত ও জট দেখা যায়।

রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার এই আক্রমণের মুখে মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়া আতঙ্ক ফুটে উঠেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও। অনেকেই সেখানে জানিয়েছেন, নিরাপত্তার খোঁজে তারা নিরাপদ আশ্রয়ে, এমনকি বাড়ির বেজমেন্টেও অবস্থান নিয়েছেন।

টিএম