সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ৭০ শতাংশের বেশি মার্কিন নাগরিক স্মার্ট পদ্ধতিতে আর্থিক সমস্যার সমাধান করেন। তবে অনেকেই আর্থিক সমস্যায় পড়েন বেশকিছু ভুল সিদ্ধান্তের কারণে। এজন্য মাঝে মধ্যেই গুণতে হয় ভুলের মাশুল। তবে কিছুটা কৌশলী পরিকল্পনায় ভুলগুলো এড়ানো সম্ভব-

খরচের হিসাব না রাখা

ক্রয় কৃত প্রতিটি জিনিসের মেইনটেন্যান্স ব্যয় রয়েছে। বিক্রেতা কখনো সেই ব্যয়ের কথা সরাসরি বলেন না। আপনাকে জিনিস কেনার সময় এ ব্যয় সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে। যেমন নতুন গাড়ি কিনতে গেলে মূল ব্যয়ের পাশাপাশি জ্বালানি, সার্ভিসিং, টায়ারসহ আরও অনেক কিছুর জন্য ব্যয় হয়ে থাকে। আবার বাড়ি কেনার সময়ও ট্যাক্স ও মেইনটেন্যান্স ব্যয় হয়। এসব খরচ সম্পর্কে খানিকটা চোখ বুলিয়ে নিতে হবে এবং সতর্ক না হলে ব্যয় বেড়ে যেতে পারে। এ কারণে কোনও কিছু কেনার আগে বাজেট তৈরি করা জরুরি। 

ট্যাক্স সম্পর্কে জানাশোনার অভাব

আপনি যত উপার্জনই করেন না কেন, আপনাকে ট্যাক্সের মুখোমুখি হতেই হবে। কখনো কি ভেবেছেন ট্যাক্সের পরিমাণ কীভাবে কমানো যায়? একজন সামর্থ্যবান মানুষের অবশ্যই ট্যাক্সের পরিমাণ কমানো উচিত। অতিরিক্ত অর্থ ট্যাক্সের পেছনে ব্যয় হয়ে গেলে অন্যান্য খাতে ব্যয় বা বিনিয়োগ করা সম্ভব হয় না। অতিরিক্ত ট্যাক্স দেয়ার ফলে সঞ্চয়ও কমে যায়।

বিনিয়োগ করতে উৎসাহের অভাব

মানুষ প্রায় বলেন, হাতে টাকা পয়সা বেশি হলে বিনিয়োগ করবেন। কিন্তু এটি মারাত্মক ভুল ধারণা। অপচয়ের চেয়ে সেভিংস অ্যাকাউন্টে থাকা অর্থ বিনিয়োগ করলে, বিপদে কাজে লাগবে। কারণ মুদ্রাস্ফীতির সময় অর্থের মূল্য কমে যায়। কিন্তু ডিভিডেন্ড ফান্ড বা রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্থের মূল্য ক্রমাগতভাবে বাড়তে থাকে। এর মাধ্যমে অর্থনৈতিক মুক্তি আনা সম্ভব হয়। বিনিয়োগ ধৈর্যশীলতা বৃদ্ধি করে ও গবেষণায় উদ্যমী করে তোলে। এটি আপনাকে আত্মবিশ্বাসী ও কর্মক্ষম করে তোলে। 

জরুরি ফাণ্ডের অপচয়

চাকরিচ্যুত, অনাকাঙ্ক্ষিত বিল, গ্যাজেট মেরামতসহ আরও অনেক ব্যয় মেটাতে জরুরি ফান্ডে হাত দিতে হতে পারে। জীবনযাত্রার ব্যয়ের জন্য ৩ থেকে ৬ মাসের জন্য সেভিংস অ্যাকাউন্ট খুলে রাখা উচিত। কোথাও ঘুরতে যাওয়া বা নতুন কোনও গ্যাজেট কেনার জন্য অনেকেই উদ্বুদ্ধ হন। কিন্তু এই লোভ সামলে চলাই বুদ্ধিমানের কাজ। যদি অপ্রয়োজনীয় কারণে জরুরি ফান্ড থেকে অর্থ নেন, তাহলে প্রয়োজনের সময় কোনও অর্থ পাবেন না। কবিতায় রয়েছে- যে জন দিবসে মনের হরষে জ্বালায় মোমের বাতি, আশু গৃহে তার দেখিবে না নিশীথে মোমের বাতি। 

জরুরি ফান্ড কীভাবে তৈরি করবেন? সহজেই সেভিংস অ্যাকাউন্ট খোলা যায়। মাসিক বেতনের ১০ শতাংশ সেভিংস অ্যাকাউন্টে রাখুন। এটি বেতনের ছোট অঙ্ক হতে পারে, কিন্তু কয়েক বছর পরে এ অঙ্কই অনেক বড় হয়ে ওঠে। 

স্বাস্থ্যকে প্রাধান্য না দেয়া

স্বাস্থ্য যেকোনো সময়ে ভেঙে পড়তে পারে। যেকোন সময় শারীরিক ও মানসিক অসুস্থ হতে পারেন আপনি। কিন্তু হাসপাতালে মোটা অঙ্কের অর্থ খরচ করতে হয়। আজকের এ সময়ে স্বাস্থ্যহানির বিষয়টি হেলাফেলা করা যায় না। সুস্থতাকে সবসময় প্রাধান্য দিতে হবে। আকস্মিক অসুস্থ হয়ে যাতে অন্যের কাছে হাত পাতা না লাগে সে কারণে অগ্রিম কিছু অর্থ জমিয়ে রাখা বিচক্ষণ মানুষের কাজ। নিজের এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের স্বাস্থ্যহানি ঘটলে যাতে হাসপাতালে তাৎক্ষণিক ভাবে অর্থ দেয়া যায় সেই কারণে স্বাস্থ্যকে প্রাধান্য দেয়া সমীচীন। মনে রাখতে হবে- ‘স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল।’ 

এইচএকে/ আরআর